তরুণীকে গণধর্ষণ, মামলা করায় হুমকিতে গ্রাম ছাড়া মা-মেয়ে

comilla mapকুমিল্লা: কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কামাল্লা গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের এক তরুণীকে (১৬) গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তার মা বাদী হয়ে মামলা করায় অভিযুক্তরা হত্যার হুমকি দিচ্ছে। এতে মা-মেয়ে এখন গ্রামছাড়া।

অভিযুক্তরা হলেন- উপজেলার কামাল্লা গ্রামের রুক্কু মিয়ার ছেলে জামাল ও সাবেক চেয়ারম্যান সামাদ মিযার ছেলে আরিফ। গতকাল ২ জুন ওই তরুণীকে ধর্ষণের দায়ে তার মা বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন বলে জানান কুমিল্লা মুরাদনগর থানার ওসি একে এম মনজুর আলম।

মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ মে সন্ধ্যায় মেয়েটি বাড়ির পাশেই টিউবয়েল থেকে পানি আনতে যায়। এ সময় জামাল, আরিফ ও তাদের সহযোগীরা মুখ চাপা দিয়ে তাকে কামাল্লা ইউনিয়ন পরিষদের পাশে পরিত্যক্ত তাঁতী বাড়িতে নিয়ে গণধর্ষণ করে। পরে ভোররাতে একই গ্রামের শরিফ মিয়া মেয়েটি বাড়িতে ফিরিয়ে দেয়।

এ ঘটনায় মেয়েটির মা পরদিন ১৪ মে স্থানীয় ইউপি মেম্বার জামালকে ঘটনাটি জানান। কিন্তু ঘটনার ১৮ দিন পার হলেও কোন বিচার না পেয়ে অসহায় মা বাদী হয়ে জামাল ও আরিফ দুজনের নাম উল্লেখ করে ২ জুন শনিবার মামলা করেন। এখবর এলাকায় ছড়িয়ে গেলে অভিযুক্তরা মা মেয়েকে হুমকি দেয়। এরপর থেকে মা-মেয়ে গ্রাম ছেড়েছেন ।

মেয়ের মা মোবাইল ফোনে জানান, মেয়েটি টিওবয়েল থেকে পানি আনতে গিয়ে তার ফিরতে দেরি হলে খোঁজাখুঁজি করে তাকে পাইনি। পরে রাত তিনটার দিকে অচেতন অবস্থায় শরিফ মিয়া বাড়িতে নিয়ে আসে। শরিফ তাকে জানিয়েছে, রাত ২টায় জামাল তাকে ফোন করে ইউনিয়ন পরিষদের পাশে আসতে বলে। এসে দেখি মেয়েটি অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। তারা পরিকল্পনা করছে তাকে মেরে ফেরবে। শরিফ বলে, গরিব মানুষ মারার দরকার নেই। তার মাকে বুঝিয়ে দিয়ে আসব এবং কোন দেন-দরবার করতে বারণ করে আসব এই বলে মেয়েটিকে তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি।

তিনি অরো বলেন, থানায় মামলা করেছি শুনে জামাল তাকে ও তার মেয়েকে হত্যা করে ফেলবে বলে। তিনি ভয়ে মেয়েকে নিয়ে গ্রাম ছেড়েছেন। শরিফের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
অভিযুক্ত জামালের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। সে গা-ঢাকা দিয়েছে। তার ফোনও বন্ধ।

আরিফের বাবা কামাল্লা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান সামাদ মিয়া বলেন, বর্তমানে তিনি কামাল্লা ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি এবং সাবেক তিনবারের চেয়ারম্যান। শত্রুতাবশত তার ছেলেকে এ ঘটনার সাথে জড়িয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান, জামাল কামাল্লা ইউনিয়নের একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। সে এর আগেও কয়েকটি নারী নির্যাতনের ঘটনার সাথে জড়িত ছিলো।

মুরাদনগর থানার ওসি একে এম মনজুর আলম বলেন, মুরাদনগর উপজেলার কামাল্লা গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের এক তরুণী গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। থানায় এমন একটি অভিযোগ করেছেন ধর্ষিতার মা। মেয়েটিকে পরীক্ষা করা জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছি। আসামি গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে।