যশোরে শিশুর দু’চোখ অন্ধ করলো ভুয়া কবিরাজ!

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর: যশোরের মণিরামপুরে জিন তাড়ানোর নামে ঝাঁড়-ফুঁক দেয়াসহ চোখের মধ্যে বিষাক্ত গাছের রস দিয়ে মাছুম বিল্লাহ নামের ১৭ মাসের ওই শিশু দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে ভুয়া কবিরাজের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পর শুক্রবার রাতে শিশুর স্বজনরা ভুয়া কবিরাজ মুনসুর আলীকে ধরে বাড়িতে আটক রেখে পুলিশে সোপর্দ করার প্রস্তুতি নেয়। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে একটি চক্র শিশুর চোখ ভালো করতে সমুদয় খরচ বহন করার টোপ দিয়ে ওই কবিরাজের পরিবারসহ তাকে মুক্ত করে নিয়ে যায়।

jessore nঘটনার শিকার শিশু মাছুম বিল্লাহ মণিরামপুর পৌর এলাকার তাহেরপুর গ্রামের আকরাম মোড় নামক স্থানের মৃত শরিফুল ইসলাম ছেলে। ক্যান্সারে শরিফুলের মৃত্যু হয়েছে।

ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, শিশু মাছুমের পিতা শরিফুলের মৃত্যুর পর শিশুকে হতদরিদ্র নানী মরিয়ম বেগম ও মা সোনিয়া খাতুন দেখভাল করে আসছে। মাস খানেক আগে শিশুটি জ্বরে আক্রান্ত হয়। ভয় পেয়ে জ্বর হয়েছে-এমন ভাবনায় তাকে পার্শ্ববর্তী কাশিপুর গ্রামের মৃত মোহাম্মদ গোলদারের পুত্র কথিত কবিরাজ মুনসুর আলীকে খবর দেয়া হয়। কবিরাজ শিশুকে দেখে জানায়, নিজ এলাকায় তার চিকিৎসা করা যাবে না। তাকে (শিশু) নিতে হবে তার দাদার বাড়ি উপজেলার জালালপুর গ্রামে।

শিশুর নানী মরিয়ম জানান, কবিরাজের কথামতে জালালপুর গ্রামে নেয়ার হয় মাছুমকে। ‘শিশুর উপর জিনের আঁচড় লেগেছে’-এমন কথা বলে শিশুর শরীরে ঝাঁড়-ফুঁক দেয়াসহ চোখের মধ্যে ওষুধ নামের তরল রস দেয়া হয়। এর কয়েক দিন পর মাছুম দু’চোখ দিয়ে কিছুই দেখতে পাচ্ছে না বলে জানান নানী মরিয়ম।

এরপর থেকে ওই কবিরাজকে তারা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে কোথাও পাননি। হঠাৎ শুক্রবার রাতে পৌর শহরের রাজগঞ্জ মোড়ের পাশে ট্রেকার স্ট্যান্ডে অনেক মানুষের ভীড়ে কবিরাজ মুনসুরকে পাকড়াও করে বাড়িতে নিয়ে আটক রাখার পর পুলিশে দিতে প্রস্তুতি নেয়া হয়।

খবর পেয়ে আটক কবিরাজের পরিবারসহ একটি চক্র আকরাম মোড়ে আসে। এ সময় শিশুর দু’চোখ ভালো করতে যত টাকা লাগবে তা বহন করার মৌখিক আশ্বাস দিয়ে কবিরাজকে মুক্ত করে নিয়ে যাওয়া হয়।