বিস্ময়ের জন্ম দিতে পারে যেসব দল

hose morinhoস্পোর্টস ডেস্ক: ক্লাব ফুটবলের পরিচিত মুখ জোসে মরিনহো। সবচেয়ে সফল কোচদের একজন তিনি। জন্ম পর্তুগালে। জীবনের শুরুতে ছিলেন একজন ফুটবলার। ফুটবলার হিসেবে তার ক্যারিয়ার যতটা উজ্জ্বল, তার চেয়েও হাজারগুণ উজ্জ্বল কোচিং ক্যারিয়ার। ক্যারিয়ারে তিনি পোর্তো, রিয়াল মাদ্রিদ ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মতো দলগুলোকে কোচিং করিয়েছেন। জিতেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, পর্তুগিজ লিগ, লা লিগা ও ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা। ক্লাব ফুটবলে কোচিং করালেও জাতীয় দলের দায়িত্ব নেননি এখনো। ভবিষ্যতে নেবেন কি না, এটা বলা যাচ্ছে না। প্রিমিয়ার লিগ শেষ, এখন বিশ্রামে সময় পার করছেন। তবে বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে অন্য সবার মতোই তিনি উত্তেজিত। ইংল্যান্ডের একটি ম্যাগাজিনে বিশ্বকাপ নিয়ে কথা বলেন।

বিশ্বকাপ নিয়ে আপনি কি উত্তেজিত?

অবশ্যই। অন্য সবার মতো বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে আমার উত্তেজনাও তুঙ্গে। বিশ্বকাপ আমার কাছে সত্যিই আলাদা উন্মাদনা সৃষ্টি করে। বিশ্বকাপ ফুটবল ও অলিম্পিক এই গ্রহের সেরা দুটি ইভেন্ট। তবে আমি মনে করি, বিশ্বকাপে সেরা ফুটবল প্রদর্শিত হয় না। কারণ, ক্লাব ফুটবলে দলগুলো গোছানোর সময় পায়। কিন্তু আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সেই সময়টা পায় না দলগুলো। সেজন্য সেরা ফুটবলটা দেখতে পারেন না ফুটবলপ্রেমীরা।

এবার কোন ফুটবলারের বিশ্বকাপ জেতার সম্ভাবনা বেশি…

কাগজে কলমে যা ভাবা হয়েছে, আমি মনে করি লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো দল নিয়ে তারচেয়েও ভালো করবেন। এবারের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ও পর্তুগাল ভালো করবে। ব্রাজিল এমন একটি দল, যাদের প্র্রতিভার অভাব হয় না কখনো। ব্রাজিলের দিকে আলাদা নজর রাখা উচিত সবার। আমার মনে হয় সবার নজর থাকবে এই দলটির দিকে। ইউরোপিয়ান দলগুলোর মধ্যে স্পেন দারুণ খেলেছে বাছাই পর্বে। এটাও সবাইকে মনে রাখতে হবে বেলজিয়াম, ইংল্যান্ড, মিসর এমনকি সেনেগালও বিস্ময়ের জন্ম দিতে পারে।

আপনার দৃষ্টিতে বিশ্বকাপের সর্বকালের সেরা ফুটবলার কে?

এর উত্তর দেওয়া আমার পক্ষে অসম্ভব। ১৯৬৩ সালে আমার জন্ম। ১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপই আমার প্রথম। যদিও মাত্র তিন বছর বয়সে বিশ্বকাপ আমার পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। ১৯৭০ সালের আগ পর্যন্ত আমার মতে স্যার ববি চার্লটন ও ইউসেবিও বিশ্বকাপের আগে সেরা খেলোয়াড়। পেলে, ম্যারাডোনা, বেকেনবাওয়ার, ব্রাজিলের রোনালদো এরা সবাই অসাধারণ ফুটবলার। সত্যি বলতে কী চার বছর পরপর প্রতিটি বিশ্বকাপেই একজন করে তারকার জন্ম হয়। সুতরাং আমার পক্ষে ফুটবলারদের তুলনা করা খুবই কঠিন কাজ।

১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড ও পর্তুগালের সেমিফাইনালের কথা নিশ্চয় মনে আছে। এবারের বিশ্বকাপে পর্তুগাল কেমন করবে?

শুধু ১৯৬৬ সালেই নয়, ২০০৬ সালের বিশ্বকাপের সেমিফাইনালেও খেলেছিল পর্তুগাল। এ ছাড়া ২০১৬ সালে ইউরো চ্যাম্পিয়নও হয়েছি আমরা। সুতরাং পর্তুগাল বিশ্বের অন্যতম সেরা একটি ফুটবল দল এটা বলাই যায়। একটি বিষয় হচ্ছে, পর্তুগালে এখন নিয়মিতই ভালো ফুটবলার উঠে আসছে। আমি মনে করি, দুই বছর আগের ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ জেতা দলের চেয়েও এখনকার ফুটবলাররা অনেক পরিণত। পর্তুগাল এবারের বিশ্বকাপে যে কোনো কিছু করতে পারে। নিজেদের দিনে আমরা বিশ্বের যে কোনো দলকে হারানোর ক্ষমতা রাখি।

বিশ্বকাপ কি আপনাকে আপনার ক্যারিয়ার গড়তে অনুপ্রাণিত করেছে?

একজন অধিনায়ক যখন ট্রফি তুলে ধরেন, সেটা অবশ্যই অনুপ্রাণিত করে সবাইকে। আমি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এবং বিশ্বকাপ ট্রপির কথা বলব, যা সবাইকে অনুপ্রাণিত করে। আপনি যখন শিশু, কিংবা তরুণ ফুটবলার, অথবা তরুণ কোচ, তখন বিশ্বকাপের ট্রফি তুলতে দেখে আপনিও স্বপ্ন দেখবেন এমন একটি মুহূর্তের সঙ্গী হতে। আমি কিন্তু ভাগ্যবান, এর মধ্যেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি তুলে ধরেছি।

বছর কয়েক আগে বলেছিলেন, ক্লান্তি অনুভব করলে পর্তুগালে চলে যাবেন। এখন কি মনে হয় আপনি ক্লান্ত?

না, না। আমি এখনো ক্লান্তির ধারে কাছে পৌঁছাইনি। একটি ক্লাবের কোচ হয়ে প্রতি সপ্তাহে একটি করে ম্যাচ খেলি এবং এ জন্য ফিট থাকতে পরিশ্রমও করি। আমি আরও কয়েক বছর খেলার ভিতরেই থাকতে চাই।