চীনের সঙ্গে নতুন জোট গড়ছে পাকিস্তান, পরিকল্পনায় আছে বাংলাদেশও

চীনের সঙ্গে নতুন একটি আঞ্চলিক জোট গঠনের পরিকল্পনায় কাজ করছে পাকিস্তান। এই জোট গঠনের পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত আছে বাংলাদেশও। বলা হচ্ছে, দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) বিকল্প হয়ে উঠতে পারে সম্ভাব্য ওই জোটটি ।

মূলত, এই উদ্যোগেরই অংশ হিসেবে সম্প্রতি চীনের কুনমিং শহরে পাকিস্তান, চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (৩০ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, পাকিস্তান ও চীন বর্তমানে একটি নতুন আঞ্চলিক জোট গঠনের পরিকল্পনায় একসঙ্গে কাজ করছে, যা দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) বিকল্প হয়ে উঠতে পারে।

ইসলামাবাদ ও বেইজিংয়ের মধ্যে এই বিষয়ে আলোচনা এরই মধ্যে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। দুই দেশের মতে, দক্ষিণ এশিয়ায় বাণিজ্য ও যোগাযোগ বাড়িয়ে আঞ্চলিক সংহতির জন্য নতুন একটি জোট সময়ের দাবি।

সম্প্রতি চীনের কুনমিং শহরে পাকিস্তান, চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ছিল এই উদ্যোগেরই একটি অংশ। এটি এই তিন দেশের শীর্ষ কূটনীতিকদের মধ্যে প্রথম বৈঠক, যা ভারতের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মূলত, গত ১৯ জুন অনুষ্ঠিত এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল সার্কের সদস্য দেশগুলোকে নতুন এই জোটে আমন্ত্রণ জানানো।

বেশ কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে এক্সপ্রেস ট্রিউবিউনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতকে নতুন প্রস্তাবিত এই জোটে আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে। তবে দিল্লি এতে ইতিবাচক সাড়া দেবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে, কারণ ভারতের আঞ্চলিক নীতি ও স্বার্থ অন্য দেশের চেয়ে আলাদা।

তবে, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, আফগানিস্তানসহ অন্যান্য দেশ নতুন এই গোষ্ঠীর অংশ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

সম্ভাব্য নতুন এই জোট বা সংস্থার মূল উদ্দেশ্য হলো বর্ধিত বাণিজ্য ও সংযোগের মাধ্যমে বৃহত্তর আঞ্চলিক সম্পৃক্ততা অর্জন করা। সার্ককে এক সময় দক্ষিণ এশিয়ার ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন’ বলা হতো। কিন্তু, ভারত-পাকিস্তানের শত্রুভাবাপন্ন সম্পর্কের কারণে অকার্যকর হয়ে পড়ে এটি।

সর্বশেষ সার্ক সম্মেলন হয়েছিল ১০ বছর আগে। ২০১৬ সালে ইসলামাবাদে সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও ভারত সেটা বয়কট করে এবং বাংলাদেশও সেই সম্মেলনে অংশ নেয়নি।

এরপর সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করতে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, যদিও পাকিস্তান সম্মেলন আয়োজন করতে বেশ আগ্রহীই ছিল। সম্প্রতি পেহেলগাম হামলার পর পাকিস্তানি ব্যবসায়ীদের জন্য সার্কের বিশেষ ভিসা সুবিধাও বাতিল করে দেয় ভারত, যা সার্কের ভবিষ্যৎকে আরও অনিশ্চিত করে তোলে।

এমন অবস্থায় পাকিস্তান ও চীন কয়েক মাস ধরে নতুন সংস্থা বা জোট গঠনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করছিল এবং উভয় দেশই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে উন্নত ভবিষ্যতের জন্য একই মনোভাবসম্পন্ন দেশগুলোর একে অপরের সঙ্গে হাত মেলানো উচিত। মূলত বাণিজ্য, যোগাযোগ ও আঞ্চলিক সংযুক্তি বাড়ানোই হবে নতুন জোটের মূল লক্ষ্য।