বিস্মিত বিসিবি’র ‘হোয়াইটওয়াশ’ বাঁচানোর প্রার্থনা

afgan bangladeshস্পোর্টস ডেস্ক: আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩-০তে সিরিজ জয়ের স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু সাকিব আল হাসানদের ভাগ্যললাটে এখন ঠিক তার উল্টোটাই ঝুলছে। সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৪৫ রানের হার। ভক্তরা অপেক্ষায় ছিল দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াবে টাইগাররা। কিন্তু সেই আশা গুঁড়িয়ে সিরিজ হাতছাড়া হয়েছে ৬ উইকেটের হারে। এমন হারে শুধু লজ্জার ওজনই বাড়েনি প্রশ্ন উঠেছে বাংলাদেশের খেলার ধরন নিয়েও।

১৮ বছর ধরে টেস্ট খেলা দল কিভাবে এমন আত্মসমর্পণ করে তাও এখন বড় প্রশ্ন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) মিডিয়া বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনূসও বিস্মিত। তবে সেটি হার নিয়ে নয়, হারের ধরন নিয়ে। আজ সিরিজের শেষ ম্যাচ। হারলেই হোয়াইটওয়াশ। আর বিসিবি’র প্রার্থনা এখন যেন অন্তত হোয়াইটওয়াশটা রক্ষা করে দল। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২-১ হলেও ঠিক আছে। হোয়াইটওয়াশ না হলেই হলো। সিরিজ হারতে পারি কারণ সেটা তাদের হোম গ্রাউন্ড। সেখানে তারা অনেক দিন ধরে অনুশীলন করছে। এবং টি টোয়েন্টিতে তারা সাম্প্রতিক অন্যতম সেরা দল। তাদের কাছে যে ধরনের স্পিনার আছে সব মিলিয়ে তাদের এতো খাটো করে দেখছি না। কথা হচ্ছে আমরা ওদের চাইতে পেশাদার এবং অভিজ্ঞ। সেখান থেকে আমাদের সিরিজটা অন্তত জেতা উচিত ছিল।’

আজ সিরিজের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় সিরিজ জিতে উজ্জীবিত আফগানদের ফের মুখোমুখি হবে বাংলাাদেশ দল। প্রথম দুই ম্যাচে এলোমেলো ও অপরিকল্পিত ক্রিকেট খেলেছে সাকিবের দল। তাতে প্রশ্ন উঠেছে তাদের যোগ্যতা ও খেলার ধরন নিয়ে। জালাল ইউনূস বলেন, ‘ডিজাস্টার বলবো না। ম্যাচে এ রকম হয়েই থাকে। ২০১৫ সালে আমাদের দেশে যখন পাকিস্তান এসেছিলো তাদের সিরিজি হারিয়েছি। দক্ষিণ আফ্রিকা এসেছিলো তাদেরও হারিয়েছি। তারাতো প্রত্যাশা করেনি যে সিরিজ হারবে। তবে ভাবিনি যে পর পর দুইটা ম্যাচই হেরে যাবো। এমন হতে পারতো প্রথম ম্যাচটা আমরা হেরেছি এখান থেকে শিখে দ্বিতীয় ম্যাচে শুধরে নিয়ে আমরা জিততে পারতাম। সেটা হয়নি। আমরা যেভাবে হেরেছি সেটা মেনে নিতে পারছি না।’

আফগানদের স্পিন শক্তির চেয়ে নিজেদের পেস আক্রমণ এগিয়ে রেখেছিল বাংলাদেশ দল। কিন্তু মোস্তাফিজুর রহমানের ইনজুরিতে দলের পেস আক্রমণ দুর্বল হয়ে পড়ে। তরুণ ও অভিজ্ঞ যে পেসারদের উপর ভরসা করা হচ্ছিল। ছয় বছর পর দলে ফেরা আবুল হোসেন রাজুও প্রথম ম্যাচে নিজেকে প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। পেস বিভাগের দুর্বলতা নিয়ে জালাল ইউনূস বলেন, ‘আমাদের কিছু তরুণ ফাস্ট বোলার আছে। আবু জায়েদ রাহি আছে, রনি আছে, রাজুও অনুশীলনে ভালো করছিল এবং তাকে কোর্টনি ওয়ালশও বলছিল সে ভালো করছে। সেজন্যই তাকে মোস্তাফিজের জায়গায় নেয়া হয় । কিন্তু দেখা যাচ্ছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গিয়ে তারা সেই লেভেলে পারফর্ম করতে পারছে না।’

আজ সিরিজের শেষ ম্যাচে আফগানদের বিপক্ষে বাংলাদেশ দল কেমন হবে তা নিয়ে যতটা না আলোচনা তার চেয়ে বেশি এখন শঙ্কা ও প্রশ্ন হোয়াইটওয়াশ বাঁচানো যাবেতো? শুধু বোলিংই নয়, ব্যাটিংটাও যে বাজে করছেন তামিম, মুশফিকরা। জালাল ইউনূস বলেন, ‘আমিতো মনে করি আমরা ব্যাটিংয়ে বারবার ভুল করছি। অনেক ক্যাজুয়াল শটস খেলে আউট হচ্ছি। আপনারা দেখেছেন আইপিএল-এ ধোনি, কেন উইলিয়ামসন একাই ম্যাচ জেতায়। তাদের ডিটারমিনেশন থাকে যে আমি একাই ম্যাচ জেতাবো। আমাদের সিনিয়র প্লেয়ারদের এই ধরনের রোল নেয়া উচিত।’

অন্যদিকে বিসিবি মানছে এমন হার যেন অশনি সংকেত। তাই এখনই সতর্ক হতে হবে বলে মনে করেন জালাল ইউনূস। তিনি বলেন, ‘দুইটা ম্যাচে কোনো সময়ই মনে হয়নি আমরা জিততে পারি। এটা আমাদের জন্য অশনি সংকেত। আমাদের খুবই সতর্ক হতে হবে। তার মানে আমরা এখনও টি-টোয়েন্টির জন্য প্রস্তুত হইনি। এই ফরম্যাটে আমরা যেখানে ছিলাম সেই অবস্থানেই আছি। উন্নতি করিনি।’