যেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছেন মেসি-নেইমাররা

messi neymarস্পোর্টস ডেস্ক: দীর্ঘ মৌসুমে প্রায় প্রতি সপ্তাহেই প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলতে হয় শীর্ষ ফুটবলারদের। টানা খেলে যাওয়ার কারণে শরীরে ক্লান্তি চলে আসা, মানসিক অবসাদে আচ্ছন্ন হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। বিশ্বকাপের সময়ে তো মৌসুম শেষ করেও অবকাশ মেলে না তাদের। বিশ্বকাপের বছর পেশাদার ফুটবলে দীর্ঘ মৌসুম শেষেই দেশের হয়ে বিশ্বকাপ প্রস্তুতি শুরু করতে হয় খেলোয়াড়দের। এ অবস্থায় তারা কীভাবে নিজেদের ফিট রাখতে পারেন। চাঙ্গা থাকতে পারেন মানসিক ও শারীরিকভাবে? ১৯৯০ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড দলকে সুস্থ রাখার দায়িত্ব ছিল লন্ডনের সেন্ট মেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত ক্রীড়াবিজ্ঞানের অধ্যাপক জন ব্রায়ারের ওপর।

বিশ্বকাপের বছর মৌসুম শেষে খেলোয়াড়দের কীভাবে উজ্জীবিত রাখতে হয়, সে ব্যাপারে রীতিমতো বিশেষজ্ঞ তিনি। নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি বলেছেন, ক্লাবগুলোর বিশ্বকাপ নিয়ে কোনো মাথাব্যথাই থাকে না। কোনো নির্দিষ্ট খেলোয়াড় বিশ্বকাপে খেলতে পারলেন কি না, তাতে তাদের কিছুই যায় আসে না, ‘ক্লাবগুলো মৌসুমের শেষদিন পর্যন্ত খেলোয়াড়দের ফিট পেতে চায়। বিশ্বকাপ নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই।’ ফরাসি শারীরিক প্রশিক্ষক স্টেফান ক্যাটেরিনার মতে, এই সময় উন্নত প্রযুক্তির বিকল্প নেই। তিনি বলেন ‘খেলোয়াড়দের সুস্থ রাখার জন্য এখন উন্নতমানের প্রযুক্তির প্রয়োজন হয়। অনুশীলন বা ম্যাচের সময় জিপিএস দিয়ে প্রত্যেক খেলোয়াড়ের চলাফেরা তত্ত্বাবধান করা হয়, তারা কতটুকু দৌড়াচ্ছে, কখন থামছে, হৃৎস্পন্দন কেমন হচ্ছে ইত্যাদি।’ বাইরে থেকে খেলে আসার পরে খেলোয়াড়রা আলাদা আলাদা সমীক্ষার সম্মুখীন হন, যেখানে তাদের ঘুমের মাত্রা, শরীরের কোথাও কোনো ব্যথা আছে কি না, খাদ্যতালিকা, খাবারে পছন্দ-অপছন্দ, সেসব সম্বন্ধে প্রশ্ন করা হয়। এসব তথ্য জানা থাকলে দলের চিকিৎসক আগে থেকেই বুঝতে পারেন খেলোয়াড়ের আদৌ কোনো সমস্যা আছে কি না বা সমস্যা সমাধানে তাদের করণীয় কী? যেসব সমস্যা আপাতদৃষ্টিতে বোঝা যায় না, সেসব এমন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বের করা সম্ভব বলে জানান ক্যাটেরিনা।

মৌসুম শেষ হওয়ার পর কখনোই কোনো খেলোয়াড়কে একেবারেই বিশ্রাম দেয়া হয় না। সেই সময়টায় আসল অনুশীলন শুরুর আগে খেলোয়াড়দের বিভিন্ন হালকা অনুশীলন করানো হয়, যেমন: জঙ্গলে সাইকেল চালনা, পাহাড়ে চড়া ইত্যাদি। পুরো ব্যাপারটির উদ্দেশ্য একটাই, প্রতিমুহূর্তে একজন খেলোয়াড়কে মানসিক ও শারীরিক দুইদিক দিয়েই সেরা অবস্থায় রাখা। ২০১৩ সালে প্রকাশিত ‘সায়েন্স অ্যান্ড মেডিসিন অ্যান্ড স্পোর্টস’ সাময়ীকিতে প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়, ১৯৬৬ সালের পর থেকে খেলোয়াড়দের শারীরিক চাপ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। খেলার গতি ২০১০ সালের পর বৃদ্ধি পেয়েছে ১৫ শতাংশ, মাঠে ও অনুশীলনে পাস দেয়ার হার বেড়েছে ৩৫ শতাংশ।