তাহলে মঙ্গলে প্রাণ ছিল?

ডেস্ক রিপোর্ট: মঙ্গলগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কি না, বা আছে কি না সেটা নিয়ে কয়েক দশক ধরে গবেষণা করছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে প্রাণের অস্তিত্ব নিয়ে এবারই কিছুটা জোরালো প্রমাণ পেল মঙ্গল গ্রহে কর্মরত নাসার রোবট কিউরিসিটি রোভার।

নাসার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পৃথিবীর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ লাল ওই গ্রহে এক সময় প্রাণের অস্তিত্ব ছিল, তেমন ইঙ্গিত পেয়েছেন তারা। এই আবিষ্কারকে যুগান্তকারী এক আবিষ্কার হিসেবেই বিবেচনা করছেন বিজ্ঞানীরা। পৃথিবী ছাড়াও অন্য কোনো গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব ছিল বা আছে, সে ধারণাটা আরো পাকাপোক্ত হলো এই আবিষ্কারে।

নাসা ২০১১ সালে মঙ্গলগ্রহের উদ্দেশ্যে কিউরিসিটি রোভার নামের রোবটযান পাঠায়। ২০১২ সালের ৬ আগস্ট মঙ্গলের গেইল ক্রেটার এলাকায় রোবটযানটি গিয়ে অবতরণ করে।

দীর্ঘ গবেষণার পর সম্প্রতি এই কিউরিসিটি রোভার প্রায় সাড়ে তিনশ’ কোটি বছর আগের এক পাথুরে এলাকার হারিয়ে যাওয়া হ্রদের তলদেশ থেকে অর্গানিক ম্যাটার পেয়েছে। প্রাচীন সেই অর্গানিক ম্যাটারের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে গেইল ক্রেটার এলাকার মাউন্ট শার্পের পাদদেশে। এটি সরাসরি প্রাণের অস্তিত্ব প্রমাণ না করলেও মঙ্গলগ্রহে এক সময় প্রাণী ছিল, সে কথাই জোরালো ভাবে স্বীকৃতি দিচ্ছে।

এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ এক আবিষ্কার উল্লেখ করে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব নিয়ে যে গবষেণা চলছে, এই আবিষ্কারের পর আরো চমক লাগানো কিছু জানতে পারবেন বলেই আশা করছেন তারা।

২০১২ সালে প্রথম অল্প পরিমাণে অর্গানিক ম্যাটার বা জৈব উপাদান পাওয়ার কথা জানায় নাসা। তবে এবার অনেক জটিল, বৈচিত্র্যময় জৈব উপাদানের অস্তিত্ব পাওয়ার কথাই জানিয়েছে নাসা। এছাড়া মঙ্গলে মিথেন গ্যাস থাকার ব্যাপারেও প্রমাণ পেয়েছে কিউরিসিটি রোভার। এই আবিষ্কারের মাধ্যমে মঙ্গলে এক সময় প্রাণের অস্তিত্ব ছিল, সে ধারণাটা আরো প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে।

তবে কিউরিসিটি রোভার মঙ্গলের পৃষ্ঠদেশে মাত্র কয়েক সেন্টিমিটার পর্যন্ত খুঁড়ে গবেষণার কাজটি চালাতে পারে। এটি ততোটা আধুনিক নয়, যতোটা এই মুহূর্তের গবেষণায় প্রয়োজন। নাসা ২০২০ সালে আরো আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন একটি রোভার বা রোবটযান পাঠাতে চলেছে মঙ্গলে। সেটি গ্রহটির প্রাণের অস্তিত্ব আরো বিশদভাবে অনুসন্ধান করতে পারবে, তেমনটাই আশা করছেন বিজ্ঞানীরা।