খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে ডিসিদের কাছে স্মারকলিপি ১৪ জুন

rizbiঢাকা: আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগেই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে আগামী ১৪ জুন সারা দেশের জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) কাছে স্মারকলিপি দেবে দলটি।

সোমবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

রুহুল কবির রিজভী বলেন,‘আমরা আবারও সরকারের কাছে জোরালো দাবি করছি, কাল বিলম্ব না করে এই মুহূর্তে খালেদা জিয়াকে তাঁর পছন্দ অনুযায়ী বিশেষায়িত ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক। ঈদুল ফিতরের আগেই তাঁকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া হোক। খালেদা জিয়ার জীবন বিপন্ন করার গভীর ষড়যন্ত্রে মেতেছে সরকার। এক অমানবিক প্রতিহিংসার শিকার বেগম জিয়া এখন গুরুতর অসুস্থতা নিয়ে বিধ্বস্ত, অবাসযোগ্য, অন্ধকার গুহার মতো একটি কক্ষের মধ্যে বন্দি।’

রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ‘খালেদা জিয়া চিকিৎসা বঞ্চিত, তাঁর মানবাধিকার লঙ্ঘিত, বেঁচে থাকার অধিকার অপহৃত। গত ৫ জুন ‘ট্রানজিয়েন্ট ইস্কিমিক অ্যাটাক’ (টিআইএ) এ আক্রান্ত হয়ে তিনি পাঁচ-ছয় মিনিট অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু দুই দিন পর বেগম জিয়ার নিকটাত্মীয়রা দেখা করে আসার পর আমাদেরকে এই ঘটনা জানানো হয়। কিন্তু তার আগ পর্যন্ত কারা কর্তৃপক্ষ নীরব নিশ্চুপ থেকেছে। আমরা গণমাধ্যমে এ বিষয়ে সোচ্চার হওয়ার পর কারা কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি জানে না বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মন্তব্য করেন। তাহলে কি দেশনেত্রীর জীবন ও নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ঠেলে দিতেই কারা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে?’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দাবি করেছিলেন যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মাইল্ড স্ট্রোক না, বরং সামান্য সুগার ফল করেছিল।

তাঁর এই মন্তব্যের জবাবে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকও বলেছিলেন যে,খালেদা জিয়ার সুগার লেভেল কমে গিয়েছিল। যদি তাঁর কথাই ঠিক হয় তাহলে সুগার লেভেল কমে যাওয়াও তো বিপজ্জনক। কিন্তু বাস্তবে উনি টিআইএতে আক্রান্ত হয়ে জ্ঞান হারিয়েছিলেন। যা তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের মাধ্যমে জানা যায়। চিকিৎসকগণ বেগম জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ তাৎক্ষণিক ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তির সুপারিশ করেছিলেন। দেশনেত্রীর জ্ঞান হারানোর মতো এত বড় একটি দুঃসংবাদের পরেও কারা কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা, দিনের পর দিন সময় ক্ষেপণ করে তাঁর অসুস্থতাকে আশঙ্কাজনক মাত্রায় নিয়ে যেতে চাচ্ছে।’

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার দাবি করে রুহুল কবির রিজভী আরো বলেন, ‘সরকার বেগম জিয়াকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার মহাচক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। আর সেই জন্যে গুরুতর অসুস্থ খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে তাচ্ছিল্য ও অবহেলা করছে। বারবার ইউনাইটেড হাসপাতালে উন্নতমানের চিকিৎসার দাবি উপেক্ষা করে সরকার তাঁকে পিজি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার কথা বলছেন। সেখানে তো সব দলবাজ চিকিৎসক। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদেরকে তো আগেই সেখান থেকে চাকরিচ্যুত করে বিদায় দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের দলবাজ চিকিৎসকদের দ্বারা বেগম জিয়ার যথাযথ চিকিৎসা হবে না। কেননা তাদের ওপর খালেদা জিয়া এবং দেশের মানুষের কোনো আস্থা নেই। তারপরেও সরকার জবরদস্তিমূলকভাবে তাঁকে পিজি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার কথা বলা দূরভিসন্ধিমূলক ও সুপরিকল্পিত চক্রান্ত।’

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির অন্য নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।