বনানীতে যুবলীগ নেতা খুন

বনানী: রাজধানীর বনানী থানা এলাকা থেকে যুবলীগ নেতা কাজী রাশেদ (৩২) হত্যার আগে পুরো এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল খুনিরা। যুবলীগ কার্যালয়ে হত্যার কোনো তথ্য-প্রমাণ নেই। হত্যার আলামত ঢাকতেই খুনিরা এমনটা করেছেন।

রোববার সকাল ৮টার দিকে বনানী থানার বন ভবনের পেছনের গলি থেকে যুবলীগ নেতা কাজী রাশেদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।রাশেদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার বাবা আবুল হোসেন বাদী হয়ে যুবলীগ নেতা সোহেল ও জাকিরসহ পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেছেন।

এদিকে হত্যার ঘটনাটি থানা পুলিশের পাশাপাশি তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ও র‌্যাব।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (উত্তর) বিভাগের উপ-কমিশনার মশিউর রহমান যুগান্তরকে বলেন, এটা পরিকল্পিত হত্যা। হত্যার আগে সন্ত্রাসীরা পুরো এলাকার সিসিটিভি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল। যে পার্টি অফিসে বসে তারা আড্ডা দিত সেখানেরও সিটিটিভির সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল।

তবে ধারণা করা হচ্ছে, এ পার্টি অফিসেই তাকে হত্যা করা হতে পারে। অথবা অন্য কোথাও রাশেদকে হত্যা করে তার লাশ বাড়ির পাশে রেখে গেছে।

অনেকগুলো বিষয় মাথায় রেখে তদন্ত চলছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব, ভাগবাটোয়ারা নিয়ে কোনো দ্বন্দ্ব ছিল কিনা সেটাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। খুনের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (উত্তর) বিভাগের উপ-কমিশনার বলেন, হত্যার ঘটনাটি থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবি ছায়া তদন্ত করছে। হত্যা রহস্য উদ্ঘাটন ও খুনিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।

বনানী থানার ওসি অপারেশন সাইহান ওলিউল্লাহ যুগান্তরকে বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে বন ভবনের পেছনের মহাখালী স্কুল রোডের জিপি গ/৩৩/১ পাশের গলি থেকে রাশেদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তার বুকে ও পেটে কয়েকটি ছিদ্র রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি গুলির চিহ্ন।

শনিবার রাতের যে কোনো সময় হত্যা করে ওই স্থানে লাশ ফেলে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, স্থানীয় যুবলীগ কার্যালয়ের ভেতরে রাশেদকে হত্যা করার কোনো তথ্য-প্রমাণ পুলিশের কাছে নেই।

বাবা আবুল হোসেন যুগান্তরকে বলেন, তার ছেলেকে সোহেল পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। তিনি বলেন, রাশেদ ২০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিল। রাশেদ ও সোহেল দীর্ঘদিন ধরে একসঙ্গে যুবলীগের রাজনীতি করলেও ৩ বছর ধরে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। বেশ কয়েকবার রাশেদকে মারধর করা হয়েছে। হত্যারও হুমকি দেয়া হয়েছে।

ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানির গাড়ি চালক আবুল হোসেন বলেন, আমি চাকরি থেকে অবসর নিয়েছি এবং সেখানে রাশেদকে দেয়ার কথা ছিল। রাজনীতি করলেও রাশেদ গাড়ি চালাতে রাজি ছিল। রাশেদ রাজনীতি ছেড়ে দিতে চাইলে তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে সোহেল বলেছিল, রাজনীতি ছেড়ে দিলে তোকে ভালো থাকতে দেব না।

তিনি আরও বলেন, তার ছেলেকে সোহেল ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী হত্যা করেছে। হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।