২ শিক্ষার্থীর পরিবারকে ১০ লাখ টাকা দেয়ার নির্দেশ

dhaka student dead newsঢাকা: রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে দুই বাসের রেষারেষিতে বাসের চাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় তাদের পরিবারকে এক সপ্তাহের মধ্যে পাঁচ লাখ করে ১০ লাখ টাকা দিতে জাবালে নূর পরিবহনকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেন। আদালতে রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল নিজেই শুনানি করেন।

রিট আবেদনে স্বরাষ্ট্র সচিব, সড়ক পরিবহন সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকার পুলিশ কমিশনার, অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক), বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এবং জাবালে নূর পরিবহন কর্তৃপক্ষকে বিবাদী করা হয়েছে।

ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, বিদ্যমান যে ট্রাফিক আইন আছে তা যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না এবং শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের নিহত দুই শিক্ষার্থীর প্রত্যেকের পরিবারকে ব্যাংক ইন্টারেস্টসহ দুই কোটি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস বলেন, আদালত দুই পরিবারের তাৎক্ষণিক চাহিদা মেটানোর জন্য জাবালে নূর পরিবহনকে এক সপ্তাহের মধ্যে ৫ লাখ টাকা করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আহত হয়ে যেসব শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে আছেন তাদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে চিকিৎসা খরচ বহন করতে ওই পরিবহনকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

একই সঙ্গে চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স কোন যোগ্যতার ভিত্তি দেওয়া হয় এবং সড়কে চলাচলকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিআরটিএ কী পদক্ষেপ নিয়েছে সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে বিআরটিএকে নির্দেশ দিয়েছেন।

পরবর্তী আদেশের জন্য ১২ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়েছে। ওই দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হবে।

এছাড়া কুর্মিটোলার এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় জাবালে নূর পরিবহনের দায় নির্ধারণে তদন্ত প্রতিবেদন ২ মাসের মধ্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালকের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতে সহায়তা করবে পুলিশ ও বিআরটিএ বলে জানান রুহুল কুদ্দস কাজল।

রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হোটেল রেডিসনের সামনে অপেক্ষমাণ শিক্ষার্থীদের চাপা দেয় জাবালে নূর (ঢাকা মেট্রো ব-১১৯২৯৭) পরিবহনের একটি বাস।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সড়কে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন অনেক শিক্ষার্থী।

এ সময় মোহাম্মদপুর-আব্দুল্লাহপুর রুটে চলাচলকারী জাবালে নূর পরিবহনের একটি বেপরোয়া বাস তাদের ওপর উঠিয়ে দেয়া হয়। এতে ঘটনাস্থলেই এক ছাত্র ও এক ছাত্রী নিহত হন।

এদিকে ঘটনার পর ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকার ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বেরিয়ে এসে রাস্তা আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় সেখানে বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।

ক্যান্টনমেন্ট থানার এএসআই রেজাউল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনাস্থলের পাশেই শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজ।

ঘটনার সময় শিক্ষার্থীরা র‌্যাডিসনের গ্যাপ দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন, অনেকে বাসের জন্য ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

এ সময় জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস শিক্ষার্থীদের চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হন।

খবর পেয়ে শিক্ষার্থীরা বেরিয়ে এসে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা কয়েকটি যানবাহনে ভাঙচুরও চালায় বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

তবে ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন ট্রাফিক পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে দায়িত্বরত এসআই মুন্নি আক্তার।