দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের অবহিত করেছে বিএনপি। মঙ্গলবার বিকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে কূটনীতিকদের ব্রিফ করা হয়।
বিকাল ৪টার দিকে বৈঠকটি শুরু হয়। শেষ হয় সোয়া ৫টার দিকে। তবে বৈঠকের বিষয়বস্তু নিয়ে কোনো পক্ষ থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে শুরুতেই নিরাপদ সড়ক চাই দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বিএনপির পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিষয়ে নিন্দা প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে বলে জানানোহয়।
বিশেষ করে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া ব্লুম বার্নিকাটের ওপর সন্ত্রাসী মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর বিষয়টি কূটনীতিকদের বলা হয়। একই সঙ্গে দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে।
বৈঠকের এক পর্যায়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম দলের কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সম্পর্কে কূটনীতিকদের অবহিত করেন। কূটনীতিকদের জানানো হয়, কিভাবে সরকার আদালতকে ব্যবহার করে খালেদা জিয়ার কারামুক্তি ঠেকাতে জামিন নামঞ্জুর করে যাচ্ছে।
আলোচনায় উঠে আসে সদ্য অনুষ্ঠিত তিন সিটি নির্বাচনের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সরকার ও বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি, জাতীয় নির্বাচনও সুষ্ঠু হবে না।
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের অধীনে ছাড়া অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে না। এছাড়া যতদ্রুত সম্ভব খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে সুচিকিৎসার ব্যবস্থার কথাও এতে বলা হয়।
বৈঠকে অংশ নেয়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘কূটনীতিকদের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের আজকের বৈঠক নতুন কিছু নয়। বিএনপি প্রায় প্রতি মাসে অন্তত তাদের (কূটনৈতিক) সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হচ্ছে। দেশের সর্বশেষ চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করছে। সেক্ষেত্রে কূটনীতিকরাও দেশের নানা বিষয়ে জানতে চাচ্ছেন। আমরা তাদের তা অবহিত করেছি।’
তিনি বলেন, বৈঠক করা দোষের কিছু না। বৈঠক নিয়ে লুকোচুরি করাও হচ্ছে না। তবে হ্যাঁ, গণমাধ্যমকর্মীদের নানা কারণে কূটনীতিক শিষ্টাচার বিবেচনায় অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে না। কারণ সবকিছু জানানোটাও শুভ দিক না। যতটুকু প্রয়োজন পড়ে ততটুকু নিশ্চয়ই জানানো হয়ে থাকে।
বিএনপির নেতাদের মধ্যে বৈঠকে অংশ নেন, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্ঠা রিয়াজ রহমান, অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী, কেন্দ্রীয় নেতা ফাহিমা মুন্নী, রুমিন ফারহানা, জেবা খান, মীর হেলাল, তাবিথ আউয়াল প্রমুখ।
কূটনীতিকদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, ইউরো্পীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া, কুয়েত, স্পেন, পাকিস্তানসহ বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূত ও ডেপুটির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা বৈঠকে অংশ নেন।