রাবিতে গভীর রাতে তিন যুবককে পিটিয়ে পুলিশে দিল ছাত্রলীগ

রাবি প্রতিনিধি: মাদক সেবনের অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) তিন বহিরাগত যুবককে গভীর রাতে বেধড়ক পিটিয়ে পুলিশে দিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। গুরুতর আহত অবস্থায় দুই জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে এদের মধ্য একজন পুলিশ কনস্টেবল পদে কর্মরত আছে বলে জানা গেছে।

শনিবার রাত ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হলের অতিথি কক্ষে আটকে রেখে তাদের মারধর করা হয়।

আহতরা হলেন- সিরাজগঞ্জে কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল আব্দুল মোতালেব, মোটরসাইকেল মেকানিক সাজ্জাদ ও আলিমউদ্দিন। সাজ্জাদ ও আলিমের বাড়ি নগরীর শিরোইল কলোনিতে বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানায়, শনিবার রাতে জোহা হলের ১৩৪ নম্বর কক্ষে ছাত্রলীগকর্মী জাহিদের কাছে বহিরাগত তিন যুবককে দেখা যায়। তারা মাদক সেবন করছে এমন অভিযোগে তাদের ধাওয়া করে হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় ছাত্রলীগকর্মী জাহিদ পালিয়ে গেলেও বহিরাগত তিনজনকে হলের অতিথি কক্ষে নিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে বেধড়ক মারধর করা হয়।

জোহা হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি গুফরান গাজী বলেন, সন্ধ্যা ৭টার দিকে বহিরাগত তিনজন হলে প্রবেশ করে। এসময় তাদেরকে আমরা লক্ষ্য করি। এর আগেও তাদের কয়েকদিন হলে দেখতে পাওয়া যায়। রাত ১২টার দিকে ১৩৪ নাম্বার কক্ষে জাহিদের সঙ্গে মাদক সেবনকালে তাদেরকে হাতেনাতে ধরি। পরে রাত ২টার দিকে হলের আবাসিক শিক্ষক এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর উপস্থিতিতে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত উপস্থিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, মাদক সেবনকালে হাতেনাতে বহিরাগতদের আটক করা হয়। পরে রাতেই তাদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।

তবে বহিরাগত যুবকরা মাদক সেবনের বিষয়টি অস্বীকার করেন। মারধরের পর পুলিশ ভ্যানে তোলার সময় তারা সাংবাদিকদের বলেন, পুরাতন মোটরসাইকেল কেনার কথা বলে আমাদের এখানে নিয়ে আসা হয়। পরে তারা আমাদের মারধর করে। আমরা কোন ধরনের মাদক সেবন করিনি। আমাদের মোটরসাইকেলটি জোহা হল গেটে রয়েছে।

জানতে চাইলে জোহা হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশের এএসআই বলেন, ‘মোটরসাইকেলটি বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার হেফাজতে রয়েছে।’

ঘটনাস্থালে উপস্থিত হয়ে জোহা হলের আবাসিক শিক্ষক ড. রঞ্জন কুমার বর্মন বলেন, ‘হলের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবো। হলে বহিরাগতরা যেনো প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়ে অতি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

জানতে চাইলে নগরীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাৎ হোসেন জানান, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দুইজন যুবককে পুলিশে সোপর্দ করেছে। তাদেরকে বর্তমানে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে পুলিশ কনস্টেবলের কথা জানতে চাইলে ওসি বলেন, আমার দুজনকে পেয়েছি।