নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে সহিংসতার অভিযোগে গ্রেপ্তার ৪১ জন স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে পারছেন।
শিক্ষার্থীদের জামিন হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তাদের স্বজনরা। বিচারকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন গণফোরাম সভাপতি কামাল হোসেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সাম্প্রতিক আন্দোলনের মধ্যে গত ৫ ও ৬ অগাস্ট রাজধানীতে কয়েকটি স্থানে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ হয়।
ওই সব ঘটনায় দণ্ডবিধি ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে পুলিশ বিভিন্ন থানায় মোট ৪৩টি মামলা করে। এসব মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় ৮১ জনকে।
৬ অগাস্টের ঘটনায় বাড্ডা ও ভাটারা থানার দুই মামলায় আফতাবনগর এলাকার ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়, বসুন্ধরা এলাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, তেজগাঁও এলাকার সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় এবং মহাখালীর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।
ওই ২২ জনের মধ্যে ১৬ জনকে রোববার জামিন দেন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম মো. সাইফুজ্জামান হিরো এবং মহানগর হাকিম এ কে এম মাইনুদ্দীন সিদ্দিকী।
তাদের মধ্যে ১০ জন বাড্ডা থানার মামলার আসামি। তারা হলেন ইফতেখার আহমেদ, নূর মোহাম্মদ, জাহিদুল হক, মো. হাসান, রেদোয়ান আহমেদ, তারিকুল ইসলাম, কেএইচ এম খালেদ রেজা, মো. রেজা রিফাত আখলাক, রাশেদুল ইসলাম ও মুশফিকুর রহমান।
বাকি ছয়জন হলেন- ভাটারা থানার মামলার আসামি মাসহাদ মর্তুজা বিন আহাদ, সাখাওয়াত হোসেন নিঝুম, শিহাব শাহরিয়ার, আজিজুল করিম অন্তর, মেহেদী হাসান ও ফয়েজ আহমেদ আদনান।
আসামিপক্ষের অন্যতম আইনজীবী আখতার সোহেল বলেন, “ঈদ ও পরীক্ষা- এই দুই গ্রাউন্ডে বিচারকরা আসামিদের জামিন দিয়েছেন।”
এছাড়া ধানমণ্ডি থানার মামলায় আরও নয়জনের জামিন হয় বলে তাদের আইনজীবী মিজানুর রহমান জানিয়েছেন।
তারা হলেন- সোহাদ খান, মাসরিকুল আলম, তমাল সামাদ, ওমর সিয়াম, মাহমুদুর রহমান, মাহবুবুর রহমান, ইকবাল হাসান, মিনহাজ রহমান ও নাইমুর।
জিগাতলা এলাকায় ভাংচুর, পুলিশের উপর আক্রমণের অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
দুপুরের পর ঢাকার বিভিন্ন মহানগর হাকিম বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আরও ১৬ জনকে জামিন দেন বলে আদালত পুলিশের কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
জামিনপ্রাপ্তরা হলেন- বাড্ডা থানার মামলার আসামি সীমান্ত; উত্তরা পশ্চিম থানার মামলার আসামি মাহবুব খান রবিন, তোফয়েল, আশিক; কোতোয়ালি থানার মামলার আসামি মেহেদী, জাহিদুল, দুলাল; রমনা থানার মামলার আসামি আরমানুল, সাইরুল, দাইয়ান; পল্টন থানার মামলার আসামি সাইফুল ইসলাম অদুদ, নিউ মার্কেট থানার মামলার আসামি নূরে আলম, আজিজুর রহমান, আমিন হোসেন; শাহবাগ থানার মামলার আসামি আবু বকর সিদ্দিকী ও রিয়াজুল হক।
এর বাইরে আর কোনো শিক্ষার্থী জামিন পেয়েছেন কি না, সে বিষয়ে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো তথ্য আদালতপাড়ার পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
দুপুরে আদালতে উপস্থিত হন কামাল হোসেন, জাফরুল্লাহ, মইনুল হোসেন। এরা সবাই শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
তারা বিচারকদের ধন্যবাদ জানান শিক্ষার্থীর জামিন দেওয়ার জন্য। শিক্ষার্থীদের পরিবারকেও সান্ত্বনা দেন তারা।