তরুণরাই দেশে গণতন্ত্র ও ভারসাম্যের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করবে: মাহী বি চৌধুরী

তরুণরা যে বাংলাদেশ দেখতে চেয়েছিল তা দেখতে পারেনি বলে তারা হতাশায় ভুগছে বলে মন্তব্য করেন বিকল্পধারার সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাহি বি চৌধুরী। তিনি বলেন, তবে তাদের দ্বারাই দেশে গণতন্ত্র, সুস্থ ও ভারসাম্যের রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হবে। দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে অপার সম্ভাবনাময় এই তরণরাই এবার নেমে আসবে রাজপথে।

শুক্রবার বারিধারায় সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে নিজেকে ‘প্রজন্ম বাংলাদেশ’ নামের সংগঠনের চেয়ারম্যান হিসেবে দাবি করেন মাহী বি চৌধুরী। এ সময় তিনি ঘোষণা দেন, আগামী ২ সেপ্টেম্বর অহিংস রাজনৈতিক কর্মসূচীর মাধ্যমে রাজপথে নামতে যাচ্ছে প্রজন্ম বাংলাদেশ।

মাহী বলেন, দেশের তরুণদের নিয়ে গড়া বিকল্পধারার সহযোগী সংগঠন হচ্ছে প্রজন্ম বাংলাদেশ। এর নেতা-কর্মীদের বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। এরা সবাই স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। স্বাধীন বাংলাদেশেই এদের প্রত্যেকের জন্ম।

২০১১ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রজন্ম বাংলাদেশের জন্ম হয় বলে জানান মাহী। তিনি বলেন, এই প্রজন্ম বর্তমান রাজনীতিকে সম্পূর্ণরূপে ঘৃণা করে। সুন্দর আগামীর লক্ষে আগামী ২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কর্মসূচী দিয়ে রাজপথ কাঁপাতে আসছে তারা।

তিনি আরও বলেন, তরুণদের এই কর্মসূচীতে হেলমেট বাহিনী হামলা করতে আসলে আমরা প্রতিবাদ করব না। আক্রমণের শিকার হব। তারপরও তাদের বুঝিয়ে আমাদের দলে নিয়ে আসব। পুলিশ গ্রেফতার করতে আসলে তাদেরকেও বাঁধা দেব না। হাত ধরাধরি করে তাদের সামনে দাঁড়িয়ে থাকব। তারপরও বর্তমান অসুস্থ রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে আমাদের এ ধরণের পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে।

নির্বাচনের চার মাস বাকি থাকতে এমন কর্মসূচি কেন জানতে চাইলে মাহী বি চৌধুরী বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে আমাদের এই কর্মসূচী নয়। নির্বাচন আসলেই দেশে জোটযুদ্ধ ও ভোটযুদ্ধ শুরু হয়। এছাড়া দুঃশাসন, নৈরাজ্য তো সবসময় লেগেই থাকে। নির্বাচনের সময় আরও বেড়ে যায়।

তিনি বলেন, কেউ ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ফ্যাসিস্ট কায়দায় পদক্ষেপ নেয়। যেমন বর্তমান সরকারের আচরণে জনগণ অতিষ্ঠ। জনগণ তাদের মৌলিক ভোটাধিকারও প্রয়োগ করতে পারছে না। আমরা এই দুঃশাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেব। এই প্রজন্মকে বাদ দিয়ে রাজনীতি তো দূরে থাক, দেশ গঠনও কোনোভাবে সম্ভব না।

প্রজন্ম বাংলাদেশের চেয়ারম্যান বলেন, ব্রিটিশ আমলে জন্ম যাদের তারা পাকিস্তান আমলে বেড়ে উঠেছেন। এখন তারা দেশ পরিচালনা করছেন। তবে তারা ভারসাম্যের রাজনীতি, শোষণমুক্ত সমাজ গড়তে পারেননি। বর্তমান প্রজন্ম স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছে এবং বেড়ে উঠেছে। এদের দ্বারাই সম্ভব শোষণমুক্ত সমাজ গড়া এবং ভারসাম্যের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করা।

মাহি বি চৌধুরী আরও জানান, ইতোমধ্যে দেশের সিনিয়র সিটিজেনসহ রাজনীতিবিদদের সঙ্গে আমাদের ঐকমত্য হয়েছে। এবার নবীন এবং প্রবীণের সমন্বয় হয়েছে। সিনিয়ররা এ প্রজন্মকে সকল কাজে বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করবেন বলে নিশ্চিত করেছেন।

ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ পদ্ধতি আমি বিশ্বাস করি না। এতে আমার আস্থা নেই। কোটা সংস্কার এবং নিরাপদ সড়ক আন্দোলন নিয়ে তিনি বলেন, গোটা দেশকে অনিরাপত্তায় রেখে সড়ক নিরাপদ করা যায় না।

স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি জামায়াতে ইসলামীকে বাদ দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জাতীয় ঐক্য হলে সেখানে প্রজন্ম বাংলাদেশ থাকবে বলেও জানান তিনি।