যা ইচ্ছা সাজা দিন, আমি আর আসতে পারব না: আদালতে খালেদা

নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কারাগারের অভ্যন্তরে অস্থায়ী আদালত বসিয়ে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচারের ব্যবস্থা করায় অসন্তোষ জানিয়ে কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘এই আদালত চলতে পারে না, ন্যায়বিচারও হবে না।’

বুধবার জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার বিচারে পুরনো কারাগারের ভেতরে বসে বিশেষ আদালত। এর আগে পুরনো কারাগারের আশপাশের এলাকায় নেওয়া হয় কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা।

আসামিপক্ষের আইনজীবীদের অনুপস্থিতিতে বুধবার বেলা ১২টা ২০ মিনিটের দিকে নতুন এই এজলাসে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।

বেলা সোয়া ১২টার দিকে খালেদা জিয়াকে হুইল চেয়ারে করে আদালতে আনা হয়। বাকি সময়টুকু তিনি হুইল চেয়ারেই বসা ছিলেন। তার জন্য এজলাসে রাখা চেয়ারে বসেননি।

খালেদা জিয়া নিজের অসুস্থতার কথা তুলে ধরে বিচারককে বলেন, ‘আপনার যা ইচ্ছা আমাকে সাজা দিন। আমি আর আসতে পারবো না। আমার শরীর অনেক খারাপ। মেডিকেল রিপোর্ট দেখলে আপনারা বুঝতে পারতেন। এই আদালতে ন্যায়বিচারও হবে না।’

‘এখানে কোনো ন্যায় বিচার নেই। ইচ্ছামত বিচার হয়। আমার হাতের অবস্থা ভালো না। ডাক্তার বলছে, পা ঝুলিয়ে রাখলে ফুলে যাবে। আমি আর আসতে পারবো না’- বিচারককে বলেন খালেদা।

পরে সাংবাদিকরা কিছু বলার জন্য বললে আদালত শেষ হওয়ার পর খালেদা বলেন, ‘এই মামলায় শুনানির জন্য আজকের তারিখ সাতদিন আগে ঠিক করা ছিল। কিন্তু একদিন আগে তড়িঘড়ি করে আদলাত স্থানান্তর করে গতকাল গেজেট দেওয়া হলো কেন?’

‘আমার আইনজীবীদের আসতে দেওয়া হয়নি। আমার হাত-পা প্যারাইলাসড হয়ে যাচ্ছে। এখানে ন্যায় বিচার পাওয়া যায় না।’

আধা ঘণ্টারও কম সময় আদালতের কার্যক্রম চলার পর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা না থাকায় শুনানি মুলতবি করে আগামী ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর নতুন তারিখ ঠিক করে দেন ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ মো. আখতারুজ্জামান।

‘কারাগারে আদালত বসানো সংবিধান পরিপন্থি’

এদিকে প্রজ্ঞাপন জারি করে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা বকশীবাজার কারা অধিদপ্তরের মাঠ থেকে কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে বেলা ১১টার দিকে আদালত এলাকায় জড়ো হন খালেদার আইনজীবীরা।

তারা বলেন, কারাগারের ভেতরে আদালত বসানো সংবিধান পরিপন্থি। আইনের বিধি বিধানের বাইরে তারা যাবেন না। যদি আদালত স্থানান্তর হয়ে থাকে তাহলে আদালতকে সেখানে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি জানাতে হবে। তখনই কেবল তারা কেন্দ্রীয় কারাগারে যাবেন কি-না সেটি বিবেচনা করবেন।

উপস্থিত সিনিয়র আইনজীবীরা বলেন, এখানেই বিএনপি চেয়ারপার্সনের মামলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকেই তারা বকশীবাজারে এসেছেন।

প্রজ্ঞাপন বেআইনি, সংবিধান পরিপন্থি উল্লেখ করে তারা বলেন, আদালত স্থানান্তর হলে অপর পক্ষকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিএনপির আইনজীবীরা আদালতের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক নোটিস পাননি।