গুরুত্বপূর্ণরা থাকছেন না নির্বাচনকালীন সরকারে

নির্বাচনের সময় সংবিধান অনুযায়ী সরকারের নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি মন্ত্রিপরিষদ গঠন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই মন্ত্রিসভায় দলের গুরুত্বপূর্ণ কোনো নেতাকে না রাখার ভাবনা রয়েছে। বর্তমান মন্ত্রিসভার সদস্য হলেও দলীয় গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের নির্বাচনী কাজের জন্য ফ্রি রাখা হতে পারে। সরকার ও ক্ষমতাসীন দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ছোট আকারের একটি মন্ত্রিসভা গঠন করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেক্ষেত্রে এবারও সরকারের নিয়ম মাফিক কাজ পরিচালনার জন্য ছোট আকারের মন্ত্রিসভাই গঠন করবেন তিনি। সেক্ষেত্রে মন্ত্রিসভার সর্বোচ্চ আকার দাঁড়াতে পারে ২৫ জনে। ফলে বর্তমান মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী থেকে অর্ধেকের বেশি বাদ পড়বেন।

মন্ত্রী থেকে নির্বাচনের সুযোগ হলে নির্বাচিত হয়ে আসা সহজ হবে বলে মনে করেন মন্ত্রিসভার অনেক সদস্য। সাময়িক সময়ের জন্য নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হবে জেনেও বাদ পড়তে চান না কোনো মন্ত্রীই। তাই মন্ত্রিসভায় থাকতে নানাভাবে চেষ্টা-তদবির চালাচ্ছেন তারা।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সূত্র জানায়, অক্টোবরের যে কোনো সময় এই মন্ত্রিসভা গঠন হতে পারে। জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য করতে নির্বাচনকালীন সরকারে টেকনোক্র্যাট কোটায় অন্তত তিনজনকে মন্ত্রী করা হতে পারে। অন্য দল থেকেই তাদের মন্ত্রিসভায় নেয়া হবে।

সরকারপ্রধানের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সংবিধানে কোনো বাধ্যবাধকতা না থাকলেও ছোট আকারের মন্ত্রিসভা গঠনের মনোভাব প্রধানমন্ত্রীর। সেক্ষেত্রে বর্তমান মন্ত্রিসভার প্রবীণদের ছোট আকারের মন্ত্রিসভায় রাখতে চান না তিনি। নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হওয়ায় অনেক কাজে নিজে অংশ নিতে পারবেন না শেখ হাসিনা। নির্বাচনে দলের জন্য প্রবীণ নেতাদের পরামর্শ প্রয়োজন। অপেক্ষাকৃত প্রবীণ নেতাদের নির্বাচনকালীন সরকারের বাইরে রেখে দলের ও নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত রাখতে চান আওয়ামী লীগ সভাপতি। মনোনয়ন দেয়া হবে না এমন কয়েকজনকে নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রিসভায় রাখার ইচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, নির্বাচনকালীন সরকারপ্রধানের উপদেষ্টা হিসেবেও কেউ কেউ যুক্ত হতে পারেন। সেক্ষেত্রে কিছুটা চমক দিতে পারেন শেখ হাসিনা।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, নির্বাচনকালীন সরকারের আকার ছোট হবে। ফলে বর্তমান মন্ত্রিসভার অনেকেই বাদ পড়বেন। দলীয় প্রয়োজনে অনেককে কাজে লাগানো হবে, তাই গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের ছোট মন্ত্রিসভার বাইরে রেখে ফ্রি করে দেয়া হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রী হিসেবে ছয়জন এবং প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দুজন শপথ নিয়েছিলেন। ২৯ সদস্যের ওই মন্ত্রিসভায় ২১ মন্ত্রী ও সাত প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসেবে ছিলেন সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া ও ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ। সূত্র: জাগো নিউজ