নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন রুখে দিন: বি. চৌধুরী

বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট ও যুক্তফ্রন্ট চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী আসন্ন নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন রুখে দেয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

শুক্রবার সন্ধ্যায় দলের কুড়িল বিশ্বরোডের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, পেশাজীবীসহ বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীদের বিকল্পধারায় যোগদান অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

গণতান্ত্রিক নির্বাচন চাই উল্লেখ করে বি. চৌধুরী বলেন, ‘২০১৪ সালে দেশের মানুষ ভোটাধিকার বঞ্চিত হয়েছেন। সংসদের অধিকাংশ আসনে বিনাভোটে সরকারি দলের সদস্যরা নির্বাচিত হয়েছেন। ভোটে অনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা মন্ত্রী হয়েছেন, সংবিধান সংশোধন করেছেন এবং অনেকে ব্যাপক দুর্নীতির অংশীদার হয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটের আগে বিরোধী দলের এজেন্ট, কর্মী ও নেতাদের গ্রেফতার করে সরকারি দল বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছে। এই ধরনের নির্বাচন আবার যদি জাতীয় সংসদে হয়, তাহলে গণতন্ত্র চিরনির্বাসিত হবে। দেশবাসী আর ছিনিয়ে নেয়া নির্বাচন হতে দেবে না।’

সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘যুক্তফ্রন্ট দেশবাসীর কাছে আহ্বান রাখছে— এ ধরনের নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন রুখে দিতে হবে। আমরা গণতান্ত্রিক নির্বাচন চাই। সংসদ, ও মন্ত্রিসভা ভেঙে দিতে হবে। নির্বাচনে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনের আগে সব রাজবন্দিকে মুক্তি দিতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। প্রয়োজনে সংবিধান সংশোধন করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে উন্নয়ন এবং গণতন্ত্র উভয়ই থাকতে হবে। একটা গাছের জন্য যেমন আলো তেমনি পানিও প্রয়োজন। শুধু প্রচুর আলোর মধ্যে একটি গাছ থাকলে তাতে যদি যথেষ্ট পানি না দেয়া হয় অথবা বৃষ্টি না থাকে, তাহলে গাছ মরে যায়। অন্যদিকে প্রচুর পানি দিলেও গাছটি যদি অন্ধকারে রাখা হয়, তাহলে সেটি বাঁচবে না। রাষ্ট্র নামক বৃক্ষটিও তেমনি। উন্নয়ন যেমন প্রয়োজন, তাকে নিশ্বাস নেয়ার জন্য, কথা বলার জন্য, মতামত প্রকাশ করার জন্য ভোটের অধিকার প্রয়োজন।’

বি. চৌধুরী বলেন, ‘শুধু উন্নয়নে মন ভরবে না, শুধু গণতন্ত্রে পেট ভরবে না। দুটোই প্রয়োজন। দেশে উন্নয়ন হয়েছে, প্রবৃদ্ধি বেড়েছে সন্দেহ নাই। কিন্তু, শুধুমাত্র কয়েক হাজার রাতারাতি হওয়া কোটিপতি এই প্রবৃদ্ধির সিংহভাগ খেয়ে ফেলেছে। সরকারের হিসাবে দেশে এখনো দারিদ্র্যের হার ২২ ভাগের নিচে।’

তিনি প্রশ্ন রাখেন, কোথায় প্রবৃদ্ধির সুফল?

এর আগে বাংলাদেশ গলফ ফেডারেশনের লেডি ক্যাপ্টেন মাহমুদা চৌধুরী, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশন কেন্দ্রীয় নারী কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আম্বিয়া খাতুন শীলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপ ড. মো. নূর উদ্দিন, চিকিৎসক ডা. মো. শাহাদাত হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেনসহ বিভিন্ন দলের শতাধিক নেতাকর্মী বি. চৌধুরীর হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে বিকল্পধারায় যোগদান করেন।

বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে আলোচনা ও যোগদান সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন, বিকল্পধারার যুগ্ম-মহাসচিব ও দলের মুখপাত্র মাহী বি. চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুর রউফ মান্নান, ব্যারিস্টার ওমর ফারুক, ইঞ্জিনিয়ার মুহম্মদ ইউসুফ, মাহবুব আলী, সাহিদুর রহমান, ওয়াসিমুল ইসলাম, মাহফুজুর রহমান, অধ্যাপক আনোয়ারা বেগম, হাফিজুর রহমান ঝান্টু, ওবায়েদুর রহমান মৃধা, আসাদুজ্জামান বাচ্চু, বিএম নিজাম প্রমুখ।