রাবিতে কোটা বহালের দাবিতে আগুন জ্বালিয়ে মহাসড়ক অবরোধ

রাবি প্রতিনিধি: টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহালের দাবি জানিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড। অবরোধকালীন ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিশ্বদ্যিালয়ের প্রধান ফটকের সামনের সমাসড়কে অবস্থান নেয় সংগঠনটির প্রায় ২৫ জন সদস্য। এতে ওই সড়কে চলাচল করা যানবহন থেকে শুরু করে সাধারণ পথচারীরাও দুর্ভোগে পড়েন।

বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি তুলে দিয়ে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিক্ষোভে নামে তারা।

এ সময় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড রাজশাহী মহানগর শাখার আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন বিপ্লব বলেন, আমরা সরকারি চাকরিতে কোটা বহাল চাই। আমাদের এই দাবির বিপক্ষে যারা কথা বলবে আমরা তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহন করব।

সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি তারিকুল হাসান বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধারা নিজের রক্তের বিনিময়ে এদেশ স্বাধীন করেছেন। আর তারই পুরস্কার হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৩০ শতাংশ কোটা দিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধা কোটা আমাদের অধিকার। এ কোটা বাতিল হলে মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানকে অপমান করা হবে।’

ফার্মেসি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের দাবি, ৩০% মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখতে হবে এবং যারা এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে তাদের যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা সারাদেশে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হব। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে আমাদের বাবারা যে ভূমিকা রেখেছে, সেই ভূমিকা আমরাও রাখব এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা আবার দেশকে পুনরায় স্বাধীন করার জন্য অগ্রসর হব।’

আরবি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘মন্ত্রী পরিষদ যে সুপারিশ করেছে তা আমরা মানি না। রাজাকারদের কথা হচ্ছে কোটা থাকবে না। কেন থাকবে না? শেখ মুজিবুর দিয়ে গেছেন, এখন থাকবে এটা। মুক্তিযোদ্ধার সম্মানের জন্য রাখতেই হবে এটা।’

বাংলাদেশে যারা কোটা সংস্কার আন্দোলন করেছে সবাই কি রাজাকার, এমন প্রশ্নের উত্তরে ফরহাদ বলেন, ‘রাজাকার না। রাজাকারের উত্তরসূরী হতে পারে। যদি তা না হয় তবে কেন তারা এটা চাইবে? কোন যুক্তিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করা হবে? অন্য কোটা বাতিল করুক সমস্যা নাই।’

অবরোধে অংশ নেন রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলার করিমতলী এলাকার বাসিন্দা আলহাজ্ব মো. বদিউজ্জামান। নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের যে কোটা দিয়েছিলেন, শুনলাম নাকি কোটা উঠিয়ে দিবেন। কোটা যাতে না উঠে যায় সেজন্য আমি এখানে উপস্থিত হয়েছি। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননার জন্য কোটা চিরদিন রাখতে হবে।’

‘বঙ্গবন্ধু কোটা দিয়েছেন আর উনি উঠিয়ে দিবেন কী জন্য? কোটা উঠিয়ে দিলে সমস্ত মুক্তিযোদ্ধাকে অপমান করা হবে এজন্য আমি এখানে এসেছি।’

এসময় দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা।