বিএনপিকে ‘শয়তানের সংসার’ ছাড়তে বললেন হাছান মাহমুদ

বিএনপিকে ‘শয়তানের সংসার’ ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘২০১৩-১৪ সালের মতো পরিস্থিতি তৈরি করবেন, তা হবে না। তাই আমি বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো, কমনওয়েলথ মহাসচিব অনুরোধ জানিয়েছেন, আরও বিশ্বনেতাদের অনুরোধ আসবে আপনাদের কাছে; সুতরাং নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য আপনারা প্রস্তুতি গ্রহণ করুন এবং শয়তানের সংসার ছাড়ুন। যারা রাজনীতিতে পচে গেছে, তাদের দলে ভিড়িয়ে কোনও লাভ হবে না।’

শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত সমাবেশে এই আহ্বান জানান ড. হাছান মাহমুদ।

বিএনপি একটি শয়তান দলে পরিণত হয়েছে দাবি করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি নেতারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মিটিং করে বললেন আমরা শয়তানের সঙ্গে ঐক্য করতে রাজি আছি। অর্থাৎ বিএনপি নেতারাও শয়তান, বিএনপিও একটা শয়তান দলে রূপান্তরিত হয়েছে। তাই বিএনপি নিজেরাই ঘোষণা দিয়েছে তারা নিজেরা শয়তান এবং শয়তানের সঙ্গে ঐক্য করতে চায়। এখন বাংলাদেশে শয়তান মুচকি মুচকি হাসে। সে বলে এখন আর আমার কাজকর্ম নাই, যা আছে বিএনপি করে দেবে।’

গ্রেনেড হামলা মামলার রায়কে কেন্দ্র করে বিএনপি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে দাবি করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘১০ অক্টোবর গ্রেনেড হামলা মামলার রায়কে ঘিরে বিএনপি সারাদেশে একটি গণ্ডগোল পাকানোর জন্য, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করার জন্য একটি ছক আঁকছে। সেই ছকের অংশ হিসেবে তারা সারাদেশে কর্মসূচি দেওয়ার নামে গণ্ডগোল করতে চায়।’

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের রাজপথে অতন্দ্র প্রহরী হয়ে থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আগামী ১০ অক্টোবর গ্রেনেড হামলা মামলার রায় হবে। আমাদের অতন্দ্র প্রহরীর মতো রাজপথে থাকতে হবে। এই হামলায় আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতাকর্মী প্রাণ হারিয়েছেন। এই গ্রেনেড হামলা খালেদা জিয়ার জ্ঞাতসারে তারেক রহমানের পরিচালনায় ঘটানো হয়েছে। তাই দেশবাসীর প্রত্যাশা হচ্ছে, এই গ্রেনেড হামলার সঙ্গে তারেক, বাবরসহ যারা যুক্ত তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হোক। বিচারকার্য হয়ে গেছে, নিশ্চয়ই বিচারপতি সুচিন্তিত রায় দেবেন। এটা না হলে জনগণ মেনে নেবে না।’

ঐক্য প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে বিএনপি মাইনাস করতে চায় দাবি করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি এখন ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতাদের কাছে গিয়ে ধরনা দিয়েছে, ভাড়ায় খাটার জন্য তাদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে। এই অনুরোধ জানানোর পর তারা আবার কিছু শর্ত দিয়েছে। আমি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখলাম, বিএনপির কিছু সমর্থক এতে দলের ওপর রাগান্বিত হয়ে নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। যাদের পাঁচটা ভোট নাই, বিএনপি আজকে তাদের দুয়ারে দুয়ারে ধরনা দিচ্ছে। তারা ড. কামাল হোসেন, বি চৌধুরীকে ভাড়া করার মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানকে মাইনাস করতে চায়। এই বিষয়টি এখন বিএনপি নেতাকর্মীদের কাছে ধরা পড়ে গেছে। বিএনপিকে বর্তমানে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তারা চায় খালেদা জিয়া কারাগারে থাকুক; তারেক রহমান বিদেশে থাকুক। তারা ড. কামাল হোসেন আর বি চৌধুরীর হাত ধরে ক্ষমতায় যাবেন। খালেক ভাই আর বাবলু ভাইয়ের কাছে যাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়, তাদের হাত ধরে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন কখনও বাস্তব হবে না। আর এই বিষয়টি বুঝতে পেরে কীভাবে নির্বাচন বানচাল করা যায়, কীভাবে বাংলাদেশে একটি বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি করা যায়, কীভাবে একটা গণ্ডগোল পাকানো যায়, সেই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে বিএনপি।’

আজকের আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার সরকার বহুগুণে শক্তিশালী দাবি করে ড. হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘কমনওয়েলথ মহাসচিব বিএনপিকে চিঠি দিয়ে বলেছেন আপনারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন। এই চিঠির অর্থ হচ্ছে বর্তমান সংবিধানের আলোকে আগামী ডিসেম্বরে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, আপনারা (বিএনপি) সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। আন্দোলনের পাঁয়তারা করে দেশে বিশৃঙ্খলা করবেন না। প্রকারান্তরে কমনওয়েলথ মহাসচিব সেই কথাই বলে দিয়েছেন। তাই বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো, গ্রেনেড হামলা মামলার রায় আর নির্বাচনকে সামনে রেখে কোনও ষড়যন্ত্র করে লাভ হবে না। ২০১৩-১৪ সাল ভুলে যান, তখনকার চেয়ে আজকের আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনার সরকার বহুগুণ শক্তিশালী ও গ্রহণযোগ্য।’

সামনের দিনগুলোতে নির্বাচনের ফলাফল ঘরে না আনা পর্যন্ত নেতাকর্মীদের রাজপথে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন ড. হাছান মাহমুদ। সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দারসহ অনেকে।