‘সাকিব ভাইয়ের জায়গা নেওয়া কারও পক্ষে সম্ভব না’

সাকিব আল হাসান না থাকায় টপ অর্ডারে একজন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের শূন্যতা তৈরি হয়েছে। নির্বাচকেরা এ শূন্যতা পূরণে একটা চেষ্টা চালাতে যাচ্ছেন রাব্বিকে দিয়ে। যিনি ব্যাটিংয়ের সঙ্গে বাঁহাতি স্পিনটাও পারেন। সাকিবের বিকল্প কি আসলেই হতে পারবেন রাব্বি?

জিম্বাবুয়ে সিরিজ সামনে রেখে আজ অনুশীলন ক্যাম্প শুরু হয়েছে বাংলাদেশ দলের। শুরুতেই স্কিল অনুশীলন। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের মাঝ উইকেটে কোচ স্টিভ রোডসকে দেখা গেল কজন বাঁহাতি ব্যাটসম্যানকে নিয়ে নতুন ছকে ব্যাটিং অনুশীলন করাচ্ছেন। ব্যাটসম্যানদের কাজ হবে শট খেলা নয়, ফাঁকা বুঝে এক-দুই রান নেওয়া। ব্যাটসম্যানদের মধ্যে নতুন মুখ ফজলে রাব্বী।

সাকিব আল হাসান না থাকায় টপ অর্ডারে একজন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের শূন্যতা তৈরি হয়েছে। নির্বাচকেরা এ শূন্যতা পূরণে চেষ্টা চালাতে যাচ্ছেন রাব্বিকে দিয়ে। যিনি ব্যাটিংয়ের সঙ্গে বাঁহাতি স্পিনটাও পারেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সাকিবের শূন্যতা কি পূরণ করতে পারবেন রাব্বি?

দলের প্রতিনিধি হয়ে অনুশীলনের প্রথম দিনে সংবাদমাধ্যমের সামনে আসা রাব্বি বাস্তবতা তুলে ধরলেন, ‘সাকিব ভাইয়ের জায়গা নেওয়া কারও পক্ষে সম্ভব না। আমি মূলত ব্যাটিং অলরাউন্ডার। ব্যাটিং করতে বেশি ভালোবাসি। পাশাপাশি দলের প্রয়োজনে বোলিং করতে পারি। যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে অবশ্যই এই ভূমিকাটা পালন করার চেষ্টা করব। তবে সাকিব ভাইয়ের জায়গা নেওয়া নয়, যেটা পারি সেটিই করার চেষ্টা করব।’

১৪ বছর ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেছেন। ৩০ বছর বয়সে জাতীয় দলে এসেছেন। দুদিন আগে নির্বাচক হাবিবুল বাশার রাব্বির ফিটনেসের প্রশংসা করেছেন। জাতীয় দলের বাইরে থাকা খেলোয়াড়দের উন্নত সুযোগ-সুবিধা পাওয়া কঠিন বলে ফিটনেস নিয়ে কাজ করাও কঠিন। রাব্বি তবুও ফিটনেস ঠিক রেখেছেন, সেটির রহস্য বললেন আজ, ‘এবারের প্রিমিয়ার লিগ বেশ ভালো গেছে আমার। আমার মনে হয়েছে ফিটনেসটা যদি আরেকটু ভালো থাকত, তাহলে আমার রান ৭০০ থেকে ৮০০-৮৫০ রান হতে পারত। তখন আমার মাথায় আসছে, যে করেই হোক নিজের ফিটনেসে উন্নতি করতে হবে। আমার সৌভাগ্য, তখন আমাকে বাংলাদেশ “এ” দলে ডাকা হয়েছিল। সেখানে দুই আড়াই মাসের মতো একটা ফিটনেস ক্যাম্প হয়েছে। ওই ক্যাম্পটা আমার খুব কাজে এসেছে। খাওয়াদাওয়া নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছি। ওজন কমিয়েছি। বয়স নিয়ে যে কথাটা হচ্ছে, এসব নিয়ে ভাবি না। যদি ফিট থাকি আর আমার পারফরম্যান্স যদি ভালো থাকে, তাহলে বয়স কোনো বিষয় না।’

রাব্বি বয়সকে একটা সংখ্যা মনে করেন এখন। কিন্তু একটা সময় তিনি ক্রিকেট নিয়ে আশাই হারিয়ে ফেলেছিলেন। ক্রিকেট ছেড়ে মাঝে চাকরিবাকরিও শুরু করে দিয়েছিলেন। তবু কোন আশায় আবার ক্রিকেটে ফিরলেন, সে গল্পটাও শোনালেন রাব্বি, ‘চিন্তা করেছিলাম খেলা ছেড়ে দেওয়ার। কিন্তু কিছুদিন চাকরি করার পর আমার মনকে সান্ত্বনা দিতে পারলাম না। মনে হলো, ক্রিকেট ছাড়া থাকতে পারব না। তারপর আবার চলে এলাম, আবার খেলায় মন দিলাম। একেবারে খোলা মনে যখন খেলতে শুরু করলাম, মনে কোনো চাপ ছিল না। শেষ পর্যন্ত ভালো হয়েছে। এরপর থেকেই পরিবর্তনটা শুরু, মানসিকতায় পরিবর্তন এসেছে। বুঝেছি, চাপ ছাড়া খেললে ভালো খেলত পারব। এখন তেমন চিন্তাই করি না খেলা নিয়ে।’

চিন্তা করেন না বলেই রাব্বিকে ভীষণ আত্মবিশ্বাসী মনে হলো। প্রথমবারের মতো জাতীয় দলের প্রতিনিধি হয়ে কথা বলতে এসেছেন সংবাদমাধ্যমের সামনে অথচ কোনো জড়তা নেই। ড্রেসিংরুমের পরিবেশ, কোচের সঙ্গে কাজ করা কিংবা প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে—কিছুই তাঁকে আলাদাভাবে আলোড়িত করছে না। বরং উপভোগ করছেন সব। রাব্বি এভাবেই উপভোগ করতে চান জিম্বাবুয়ে সিরিজটাও।