এবার খাসোগি হত্যা নিয়ে মুখ খুললেন যুবরাজ সালমান

বুধবার রিয়াদে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণে আয়োজিত সম্মেলনে সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডকে ‘জঘন্য’ বলে অভিহিত করেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।

তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যা প্রসঙ্গে প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। ওই হত্যাকাণ্ডকে ‘জঘন্য’ ও ‘অপ্রয়োজনীয়’ বলে অভিহিত করেন তিনি।

রয়টার্সে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গতকাল বুধবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণে আয়োজিত বিশাল এক সম্মেলনে মোহাম্মদ বিন সালমান এসব কথা বলেন।

সম্মেলনে কথা বলার সময় খাসোগি হত্যাকাণ্ডকে ‘জঘন্য’ অভিহিত করে এর সঙ্গে জড়িতদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা হবে বলে জনসমক্ষে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন যুবরাজ। তিনি বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ড সৌদি আরববাসীর জন্য খুবই বেদনার। সারা বিশ্বের মানুষের জন্যই এটা বেদনার। এটা খুবই অপ্রয়োজনীয় ছিল।’

যুবরাজ আরো বলেন, ‘বিশ্বের কাছে আমরা প্রমাণ করব যে সৌদি আরব ও তুরস্ক এ দুই দেশ পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে অপরাধী যেই হোক, তাকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসবে। শেষ পর্যন্ত ন্যায়বিচারেরই জয় হবে।’

সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যা তুরস্ক ও সৌদি আরবের পারস্পরিক সম্পর্কে কোনো বিরূপ প্রভাব ফেলবে না মন্তব্য করে যুবরাজ বলেন, ‘তুরস্কের সঙ্গে আমাদের খুব ভালো একটি সম্পর্ক আছে। আমরা চাই না, এ ঘটনার কারণে (জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ড) তা কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত হোক। যত দিন সালমান বিন আবদুল আজিজ আমাদের বাদশা, তত দিন তা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।’

গত ২ অক্টোবর বিয়ে-সংক্রান্ত কাগজপত্র সংগ্রহ করতে তুরস্কের ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে যান খাসোগি। বাগদত্তা তুর্কি নারী হেতিজ জেঙ্গিসকে বাইরে রেখে কনস্যুলেটে প্রবেশের পর আর ফেরেননি তিনি।

এ নিয়ে তুরস্ক ও সৌদি সরকার একে অপরকে দোষারোপ করে আসছিল। সৌদি আরব বলে আসছিল, কনস্যুলেট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর নিখোঁজ হয়েছেন খাসোগি।

সৌদি আরব অবশ্য দুই সপ্তাহ পর গত ১৯ অক্টোবর শুক্রবার স্বীকার করে নেয় যে খাসোগি সৌদি কনস্যুলেটে খুন হয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত সৌদি আরব খাসোগির মরদেহ কোথায় আছে, তা নির্দিষ্ট করে জানায়নি।

পরে ২২ অক্টোবর রোববার সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল জুবেইর জানান, জামাল খাসোগিকে ভুলক্রমে হত্যা করা হয়েছে। অনেকেরই ধারণা এর সঙ্গে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান জড়িত থাকতে পারেন। গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এমন ধারণার কথা জানান।

এদিকে সৌদি আরব এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এযাবৎ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সৌদ আল-কাহতানিসহ পাঁচজনকে বরখাস্ত ও ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।