অগ্রণী ব্যাংকের নড়াইল শাখা থেকে ২০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ব্যাংকের ক্যাশ অফিসার মনজুর মোর্শেদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সাথে সাথে তার কাছে ব্যাখা তলব করা হয়েছে। একই সাথে ব্যাংকের বর্তমান ও সাবেক ব্যবস্থাপক এবং এক সিনিয়র অফিসারকে ব্যাখা তলব করা হয়েছে।
অগ্রণী ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক ও যশোরাঞ্চলের প্রধান মো. আশরাফ উল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠি থেকে জানা গেছে, মনজুর মোর্শেদ চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি নড়াইল শাখায় ক্যাশ অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। শাখার অফিস নির্দেশ নং-অফিনি/শাখা/নড়া:/৫৬/১৮ তারিখ-২৩/০১/২০১৮ ইং এর মাধ্যমে ক্যাশ বিভাগের কার্যাদি সম্পাদনের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। ক্যাশ বিভাগের দায়িত্ব পালন কালে ২৫ অক্টোবর যশোর আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিদর্শক দল (অডিট) ভল্টে রক্ষিত নগদ টাকা গণনা করে ২০ লাখ ৭২ হাজার ৭ টাকা কম পায়। পরে পরিদর্শক টিমের কাছে ক্যাশ অফিসার মনজুর মোর্শেদ স্বীকার করেন ওই টাকা তিনি আত্মসাত করেছেন। একই দিন মনজুর মোর্শেদ তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে ওই টাকা সমন্বয় করেন।
পত্রে বলা হয়েছে, শাখার ভল্ট লিমিট ২৫ লাখ টাকা। কিন্তু নিয়ম বর্হিভূতভাবে ২ কোটি ৩৪ লাখ ৬৪ হাজার ৭৮২ টাকা সংরক্ষণ করেছেন। যা উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
পত্রে আরও বলা হয়েছে, দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সততার সাথে পালন না করাসহ শাখার ভল্ট থেকে নগদ ২০ লাখ ৭২ হাজার ৭ টাকা আত্মসাতের কারণে ব্যাখা তলব করা হলো। অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড কর্মচারী প্রবিধানমালা-২০০৮ এর ৪২ (চ) উপধারা অনুযায়ী উক্ত অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় আপনার সংশ্লিষ্টতা প্রাথমিকভাবে প্রামাণিত হয়েছে। এ কারণে কেন প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তার ব্যাখা তলব করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মনজুর মোর্শেদের কাছে জানতে তার মোবাইল ফোনে ফোন করা হলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে জানান। তিনি পরে ফোন করবেন বলে জানান। কিন্তু আর কোন ফোন করেননি।
ব্যাখা তলব করা হয়েছে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর কবিরকে। পত্রে বলা হয়েছে, যশোর আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিদর্শক দল ভল্টের রক্ষিত নগদ অর্থ গণনা করে দেখা যায় যে, ২৪ অক্টেবর দৈনন্দিন লেনদেন শেষে শাখার ক্যাশ অফিসার রেজিস্টারে উল্লেখিত অর্থ অপেক্ষা ২০ লাখ ৭২ হাজার টাকা কম রয়েছে। এমনকি ভল্টের নগদ অর্থের যাচাই না করে ভল্ট তালাবদ্ধ করা হয়েছে। যা আপনার দায়িত্ব ও কর্তব্যকর্মে অবহেলার শামিল।
জানতে চাইলে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ব্যাংকের অভ্যান্তরীণ বিষয়। বিষয়টি সেদিন মিটে গেছে। আমি কোন পত্র পায়নি। তিনি বলেন, আমি এখানে মাত্র একদিন আগে যোগদান করেছি।
এ ঘটনায় ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপক স্বপন কুমার বিশ্বাসকে ব্যাখা তলব করা হয়েছে। তলব পত্রে বলা হয়েছে, আপনার কর্মকালীন সময়ে দায়িত্ব-কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করেননি। আপনার সময়ে ব্যাংকের ভল্ট থেকে অর্থ আত্মসাতের পক্রিয়া শুরু হয়।
এ ব্যাপারে জানতে ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপক স্বপন কুমার বিশ্বাস বলেন, আমি গত মঙ্গলবার রিলিজ নিয়ে চলে এসেছি। আর আমি কিছু জানি না। আমি এখনও কোন চিঠি পায়নি।
অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় দায়িত্ব পালন না করার কারণে সিনিয়র অফিসার নাজমুল হাসানকেও ব্যাখা তলব করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক ও যশোর অঞ্চলের প্রধান মো. আশরাফ উল ইসলামের মোবাইল নম্বরে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।