প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে সংলাপে বসতে ১৬ জনের নাম চূড়ান্ত করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। বিশিষ্ট আইনজীবী ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন এতে নেতৃত্ব দেবেন।
জোটের প্রধান শরিকদল বিএনপির পক্ষে পাঁচজন অংশ নেবেন। এরা হলেন- দলটির মহসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার এবং মির্জা আব্বাস।
জোটের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডির পক্ষে সংলাপে প্রতিনিধিত্ব করবেন তিনজন। এরা হলেন- দলটির সভাপতি আসম আবদুর রব, সহসভাপতি তানিয়া রব, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন।
গণফোরামের নেতাদের মধ্যে থাকবেন দলটির নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু। নাগরিক ঐক্যের পক্ষে থাকবেন দলটির উপদেষ্টা এসএম আকরাম ও আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।
জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার প্রতিনিধিত্ব করবেন সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহম্মেদ ও আবম মোস্তফা আমিন। এছাড়াও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীও অংশ নেবেন সংলাপে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সংলাপে বসতে দিনভর প্রস্তুতি নিয়েছে বিশিষ্ট আইনজীবী গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
মঙ্গলবার বিকাল সোয়া ৪টায় ড. কামাল হোসেনের মতিঝিলের চেম্বারে বৈঠক শুরু করে ঐক্যফ্রন্ট।
ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক, জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, সহ-সভাপতি তানিয়া রব, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, সাবেক ছাত্রনেতা সুলতান মুহাম্মদ মনসুর, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ।
বৈঠকর পর সংলাপে অংশগ্রহণ করতে ১৬ সদস্যের প্রতিনিধি অংশ নেবেন বলে জানান জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব।
তবে বাকি ১৪ জন কারা তাদের নাম জানাতে কৌশলগত কারণে অপারগতা প্রকাশ করে তিনি।
বিএনপি মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রতিনিধি দলে থাকছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে রব বলেন, বিএনপি মহাসচিব ১০০বার যাবেন। উনাকে বাদ দিয়ে তো সংলাপ হবে না।
আ স ম আব্দুর রব বলেন, আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণ সাদরে গ্রহণ করেছি। আমরা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় গণভবনে যাব। ঐক্যফ্রন্টের ১৫ নেতা যাবেন। কামাল হোসেন আমাদের নেতা, উনি ১৫ জনের বাইরে।
তিনি বলেন, জাতি আশা করে এই সংলাপের মাধ্যমে আগামী দিনে একটা সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে। কোনো সংলাপ ব্যর্থ হয় নাই। এই সংলাপে ৭ দফাসহ সব কিছু নিয়ে আলোচনা হবে।
আ স ম আব্দুর রব বলেন, আমরা মনে করি, দেশে যে ক্রান্তিলগ্নে যে স্ট্যাগনেন্ট অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে,কথা বলব কি বলব না… আজকে প্রধানমন্ত্রীর এই সংলাপের মধ্য দিয়ে দরজা খোলা হলো, আলাপ-আলোচনা হচ্ছে, হবে এবং চলবে।
এর আগে, গত ২৭ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে সাত দফা দাবি এবং ১১ দফা লক্ষ্য সংবলিত চিঠি দেয় ঐক্যফ্রন্ট। চিঠিটি গ্রহণ করেন আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দুই নেতা গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু ও জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহম্মেদ চিঠিটি পৌঁছে দেন।
এরপর সংলাপে সাড়া দিয়ে মঙ্গলবার সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে চিঠি দেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
চিঠিটি নিয়ে ড. কামাল হোসেনের বেইলি রোডের বাসায় যান আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ।
চিঠিতে সংলাপের জন্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় গণভবনে দাওয়াত দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।