বাংলাদেশসহ কমওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর নাগরিকদের জন্য ব্রিটিশ সশস্ত্র বাহিনীতে যোগদানের শর্ত শিথিল করছে যুক্তরাজ্য সরকার। এতে করে বাংলাদেশ, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, কানাডার মতো কমনওয়েলথভুক্ত দেশের নাগরিকদের যোগদান আগের চেয়ে অনেক সহজ হবে। এছাড়া সরকার বিদেশি সেনা নিয়োগের সংখ্যাও বাড়িয়েছে।
যুক্তরাজ্যের সশস্ত্র বাহিনীতে বিদেশি কেউ যোগ দিতে চাইলে অন্তত পাঁচ বছর যুক্তরাজ্যে বসবাস করতে হতো। তবে এবার কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর ওপর থেকে এই শর্ত তুলে নিচ্ছে সরকার। এই বিষয়ে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দেশটির পার্লামেন্টে একটি লিখিত বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর নাগরিকদের জন্য সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীতে যোগদানর ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যে পাঁচ বছর বসবাসের বাধ্যবাধকতা তুলে নিচ্ছি। এছাড়া বিদেশি সেনা যোগদানের সংখ্যাও বাড়িয়ে ১৩৫০ জন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে ১৮ বছরের নিচে কারও আবেদন গ্রহণ করা হবে না উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কমনওয়েলথের সবগুলো দেশ থেকেই আবেদন গ্রহণ করা হবে। তবে যুক্তরাজ্যে অভিভাবক ছাড়া অপ্রাপ্তবয়স্কের ক্ষেত্রে আমরা ছাড় দিচ্ছি না। আমরা ১৮ বছরের নিচে কারও আবেদন গ্রহণ করব না।’
এর আগে ১৯৯৮ সালে একবার পাঁচ বছর বসবাসের বাধ্যবাধকতা তুলে নেওয়া হয়েছিল। পরে ২০১৩ সালের মে মাসে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর জন্য এই বসবাসের বাধ্যবাধকতা জারি করা হয়। ওই সময় ২০০ জন নিয়োগের কথা বলা হয়েছিল। এবার উভয় সিদ্ধান্ত থেকেই সরে এসেছে ব্রিটিশ সরকার।
২০১৯ সালের শুরু থেকেই সেনাবাহিনী আবেদন গ্রহণ শুরু করবে। কমনওয়েলথের বাইরের কোনও দেশ থেকে আবেদন গ্রহণ করা হবে না।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, ‘কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর নাগরিকরদের সশস্ত্র বাহিনীতে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করার ঐতিহ্য রয়েছে।’
এছাড়া আয়ারল্যান্ডের নাগরিক ও নেপালের গোর্খা সম্প্রদায়ের মানুষদের ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে যোগদানের বিশেষ সুবিধা রয়েছে।
এ বছর প্রকাশিত যুক্তরাজ্যের জাতীয় নিরীক্ষা দফতরের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটিতে ৮ হাজার ২০০ সেনা, নাবিক ও বিমানসেনার ঘাটতি রয়েছে। এই ঘাটতি পূরণেই প্রথমবারের মতো সেনাবাহিনীর সবধরনের পদে আবেদনের সুযোগ পেয়েছেন নারীরা।
দেশটির সেনাবাহিনীতে বর্তমানে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর ৩ হাজার ৯৪০ জন নাগরিক কর্মরত আছেন। বিমানবাহিনীতে আছেন ৮০ জন ও রয়্যাল নেভিতে ৪৮০ জন।