নরসিংদীতে ‘নৌকা’ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২০

নরসিংদী-৪ (মনোহরদী-বেলাবো) আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন ও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত আসলাম সানীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া, পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

সংঘর্ষে এমপি হুমায়ুনের সমর্থক বেলাব উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খালেদা আক্তারসহ ২০ জন আহত হয়েছে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বেলাবো বাজারে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী ওই সংঘর্ষ চলে দফায় দফায়।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে জেলা সদর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষের সময় বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়।

পুলিশ ও দলীয় সূত্রে জানা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নরসিংদী-৪ বেলাবো-মনোরহরদী আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান বর্তমান এমপি নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে এইচ এম আসলাম সানীসহ পাঁচজন মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। সর্বশেষ দলীয় মনোনয়ন ঘোষণার পর আসলাম সানীর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।

এরই জের ধরে আজ মঙ্গলবার সকালে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে আসলাম সানীর সমর্থকরা। এ সময় মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে তারা। পরে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়।

এদিকে নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন মনোনয়ন পাওয়ায় আনন্দ মিছিলের প্রস্তুতি নেয় তাঁর সমর্থকরা। এ সময় স্থানীয় নেতাকর্মীরা বেলাবো উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কার্যালয়ে সভা করছিল। বেলাবো উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শমসের জামান ভূঁইয়া রিটনের নেতৃত্বে আসলাম সানীর সমর্থকরা এমপি হুমায়ুনের এক সমর্থককে মারধর করে। পরে এমপি সমর্থক বেলাব উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খালেদা আক্তারসহ নেতাকর্মীরা এগিয়ে এলে তাঁদের ওপরও হামলা করা হয়।

এ সময় উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে হাবিবা ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এ ব্যাপারে এইচ এম আসলাম সানী বলেন, ‘এমপির সমর্থকরা আমার সমর্থকদের মারধর করেছে। পরে এমপির ছেলে এসে প্রকাশ্যে গুলি ছুঁড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।’

সড়ক অবরোধ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আসলাম সানী বলেন, ‘এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমাকে পছন্দ করে। সেই কারণে বিক্ষোভ করেছে। আমি তো তাদের বিক্ষোভ করতে বলিনি।’

এদিকে সংর্ঘষের ব্যাপারে জানতে চাইলে এমপি নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, ‘মনোহরদী-বেলাবো উপজেলা আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ। বেলাবো উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শমসের জামান ভূঁইয়া রিটন একজন মাদকাসক্ত। সে সানীর কিছু ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়ে ক্ষোভে আমার সর্মথকদের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে।’

বেলাবো থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাহমুদ বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের একটি মিটিং চলছিল। এ সময় সানী সাহেবের সমর্থকরা এমপির সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়। পরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। তবে গুলির কোনো ঘটনা ঘটেনি। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’