যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর-বসুন্দিয়া) আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য রনজিত কুমার রায়ের নৌকার মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানিয়েছে মহাজোটের শরীক ওয়ার্কার্স পার্টি। বুধবার বেলা ১১ টার দিকে জেলা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য ইকবাল কবির জাহিদকে মনোনয়নের দাবি করা হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান ভিটু বলেন, যশোর-৪ নির্বাচনী এলাকা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এই এলাকার সংসদ সদস্য জনগণের মৌলিক সমস্যা সমাধানে কোন ভূমিকা রাখেন না। উপরন্ত তিনি সংকীর্ণ ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য সকল ধরণের গণস্বার্থ বিরোধী কার্যকলাপ করেছেন। দুর্নীতি, অর্থ বাণিজ্য, অনিয়ম ও গণ হয়রানি করে নিজের আখের গুছিয়ে চলেন। যা সরকারের ভাবমূর্তিকেও মারত্মক ক্ষতিগ্রস্ত করছে। জনগণ তার প্রতি বিক্ষুব্ধ। তার গণবিরোধী ভূমিকার ফিরিস্তি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সর্বোচ্চ নেতৃত্বকে অবহিত করেছেন। জনবিচ্ছিন্ন ব্যক্তিকে মনোনয়ন না দেবার অনুরোধ জানিয়েছিলেন বলে মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল।
জিল্লুর রহমান ভিটু আরও বলেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচনে মনোয়নয়ন প্রসঙ্গে জননেত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ঘোষনা “ আমলনামা দেখে এবং দুর্নীতির সাথে জড়িতদের মনোয়নয়ন দেয়া হবে না” এই ঘোষণার মাধ্যমে এই এলাকার মানুষ স্বস্তির নিঃশাস ফেলেছিল এবার হয়তো তারা মুক্তি পাবেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে লক্ষ্য করা গেলো আমলনামা, জরিপ, জনগণের মতামতের কোন মূল্য পেল না আবারও সেই একই ব্যক্তিকে মনোয়নয়ন দেয়া হলো। এঘটনায় এ এলাকার মানুষ হতাশ, হতবাক ও কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছে। যে ব্যক্তি যুদ্ধাপরাধী আমজাদ রাজাকারসহ বিএনপি জামাতিদের পুনর্বাসিত করছেন। নিজের দলসহ স্বাধীনতার স্বপক্ষের রাজনীতিকে কলুসিত করছেন তাকেই মনোনয়ন দেয়া হলো। এক্ষেত্রে ১৪ দলের শরিক ও মহাজোটের মতামতের কোন আমলে আনা হয়নি। যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও জোট সংস্কৃতির সাথে সংগতিপূর্ণ নয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে এই জনপদের মৌলিক সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে জনগণের পরিবর্তনের আকাঙ্খাকে ধারন করে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে আমাদের পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য ও জেলা সভাপতি এই অঞ্চলের ভবদহ, কপোতাক্ষ, ভৈরব সংস্কার আন্দোলন, শ্রেণী পেশা সহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অগ্রসৈনিক রাজপথই যার ঠিকানা সেই সংগ্রামী নেতা ইকবাল কবির জাহিদকে মনোনয়ন দেবার জন্য ১৪ দল এবং নেতৃত্বকারী আওয়ামী লীগের কাছে পার্টি আহ্বান জানিয়েছিলো। কিন্তু জনগণ তথা জোটের মতামতের কোন গুরুত্ব না দিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসাবে জনাব রনজিৎ রায়ের নাম ঘোষনা করেছেন। জাতীয় রাজনীতির এই যুগসন্ধিক্ষনে আমরা মনে করি আওয়ামী লীগ এই আসনে মনোনয়নের ক্ষেত্রে প্রার্থী হিসাবে দলমত এবং বাস্তবতাকে যথাযথ ভাবে বিবেচনা করতে পারেনি। আমরা এখনও আশাবাদী জনগণের আকাংখাকে গুরুত্ব দিয়ে আওয়ামী লীগ তথা ১৪ দল এ আসনের ক্ষেত্রে বর্তমান সিদ্ধান্ত পূর্ণবিবেচনা করে জননেতা ইকবাল কবির জাহিদকে মনোনয়ন দেবেন। সামগ্রিক স্বার্থ বিবেচনায় ১৪ দলীয় জোট তথা মহাজোটের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের প্রতি আমরা এ আহ্বান জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপাস্থিত ছিলেন যশোর-৪ আসনে প্রার্থী বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য ও জেলা সভাপতি ইকবাল কবির জাহিদ, কেন্দ্রীয় সদস্য জাকির হোসেন হবি, জেলা নেতা নাজিম উদ্দিন, অধ্যক্ষ ইসরারুল হক, বৈকুণ্ঠ বিহারী রায়, ইউনুস তালুকদার, শামীম বিশ্বাস, মিজানুর রহমান মিজান, বিপুল বিশ্বাস, শহর পার্টির সদস্য খবির শিকদার, যুব মৈত্রী যশোর জেলা সভাপতি অনুপ কুমার পিন্টু, শেখ আলাউদ্দিন, ছাত্রমৈত্রী জেলা সভাপতি শ্যামল শর্মা প্রমুখ।