গাইবান্ধায় বালু উত্তোলনের মহোৎসব

গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট ও যমুনা নদী থেকে কোনো প্রকার ইজারা ছাড়াই অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। ওই সব নদী থেকে অবাধে শত শত ট্রাকদিয়ে বালু পরিবহন করা হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। বালু ব্যবসাকে কেন্দ্র করে প্রভাবশালীদের নিয়ে গড়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। অবাধে ও অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের ফলে তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকায় বসত-বাড়িসহ আবাদি জমি দেবে ভূমিধস ও নদী ভাঙ্গনের আশংকা দেখা দিয়েছে।

মাঝে মধ্যে প্রশাসন থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে অভিযান পরিচালনা করা হলেও বালু ব্যবসায়ীরা স্থান পরির্বতন করে অন্যজায়গায় উত্তোলন অব্যাহত রেখেছেন।

জানা গেছে, সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে ব্রহ্মপুত্র নদী ও সদর উপজেলার গোঘাঘাটসহ বিভিন্ন স্থান থেকে কোনো প্রকার ইজারা ছাড়াই অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

এদিকে বালু ব্যবসাকে কেন্দ্র করে প্রভাবশালীদের নিয়ে গড়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। ওই সিন্ডিকেটে জড়িয়ে পড়েছে কয়েকজন ইউনিয়ন চেয়ারম্যানও।

সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদ ও গোঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ৭/৮ টি যত্র দানব কাকড়া দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বালু আনা নেওয়ার কাজে ব্যবহার করে হচ্ছে।

২০১০ সালের বালুমহাল আইনে বলা আছে, বিপণনের উদ্দেশ্যে কোনো উন্মুক্ত স্থান বা নদ-নদীর তলদেশ থেকে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা অথবা আবাসিক এলাকা থেকে বালু ও মাটি উত্তোলন নিষিদ্ধ। এ আইন অমান্য করলে সেই ব্যক্তি বা তাহাদের সহায়তাকারী কোন ব্যক্তির অনূর্ধ্ব ২ বছর কারাদন্ড বা ৫০ হাজার টাকা হতে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হতে পারে। শুধু তাই নয়, এই আইনের অধীন অপরাধ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক ভ্রাম্যমান আদালত বা বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচার করা যাবে।

এব্যাপারে কামারজানি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম জাকির জানান, ওইসব ব্যক্তিদের একাধিকবার নিষেধ করা সত্ত্বেও রাতের আধারে তারা বালু উত্তোলন করে আসছে।

গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল মতিন জানান, উন্মুক্ত স্থান বা নদ-নদীর তলদেশ থেকে অবৈধ ভাবে বালু বা মাটি উত্তোলনের কোনে সুযোগ নেই। তারপরও যদি কেউ অবৈধভাবে ওইসব কার্যক্রম চালান তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। পাশাপাশি প্রতিটি উপজেলায় ভ্রাম্যমান আদালত এসব বন্ধে কাজ করছে।