তারেক রহমানকে কেন আপাতত নেতৃত্ব থেকে সরে যেতে বলেছেন, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তার দাবি, তারেক রহমানের নাম ভাঙিয়ে অনেকে খাচ্ছে। এই মুহূর্তে তার সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলেও সব ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। তাই আপাতত দূরে সরে থাকাই ভালো হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। এর আগে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ঐক্যফ্রন্টের নেতা দুই বছরের জন্য তারেককে দল থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়ে নতুন আলোচনা তৈরি করেছেন।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়ে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর দলটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করা হয়। আর গত ৩০ ডিসেম্বরের ভোটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত, মনোনয়নসহ নানা বিষয়ে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
তবে সাড়ে ১৩ শতাংশ ভোট এবং আটটি আসন নিয়ে ঐক্যফ্রন্ট হেরে যাওয়ার পর বিএনপিতে নানামুখী মূল্যায়ন হচ্ছে। জাফরুল্লাহর পরামর্শ, ঢেলে সাজানো হোক বিএনপিকে।
তারেক রহমানের কেন রাজনীতি থেকে দূরে সরে যাওয়া উচিত?
তারেকের নাম ভাঙিয়ে এখানে অনেকে খাচ্ছে। ফোনেও কিছু করা যাচ্ছে না, সব ফাঁস হচ্ছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, তারেক জিয়া হয়তো ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী। এ জন্য তার চুপ করে থাকাটাই ভালো। উনি ওখানে (যুক্তরাজ্য) বসে একটা মাস্টার্স ডিগ্রি করুন। পরে এলে উনি দায়িত্ব নিতে পারবেন।’
যেহেতু তিনি দেশে আসতে পারছেন না। তার নাম ভাঙিয়ে অনেকে খাচ্ছে, এ সুযোগ না দিয়ে, ওখানে একটা ডিগ্রিও করল। আবার সার্বিক বিষয় অবজার্ভও করল। তাতে বিএনপি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বলে মনে করি।
বিএনপি কীভাবে ঘুরে দাঁড়াবে?
বিএনপির ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য এই মুহূর্তে জরুরি কাউন্সিল করা দরকার। কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব আসুক, চেয়ারম্যান হিসেবে খালেদা জিয়াই থাকুক। ওনার পরামর্শ নিয়ে বিএনপি সামনে এগিয়ে যাবে। নতুন লিডারশিপ আসুক, তাতে মঙ্গল হবে। এই মুহূর্তে তারেক রহমানের চুপ করে থাকাটাই উচিত বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি।
আপনার এই পরামর্শ কি বিএনপি নেবে?
এটা আমার ব্যক্তিগত মত, তারা মেনে নিতেও পারে। আবার নাও পারে। তবে এভাবে এগিয়ে গেলে বিএনপি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বলে আমি মনে করি।
ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে কী ভাবছেন আপনারা?
আমরা এই মুহূর্তে অন্য কোনো কর্মসূচি নিয়ে ভাবছি না। আগামী ৬ তারিখের সংলাপ নিয়ে আমরা ভাবছি। এই প্রোগ্রামটা কীভাবে সাফল্যম-িত করা যায়, সেটাই ভাবছি।
৩০ ডিসেম্বরের ভোটের ফলাফলের বিরুদ্ধে আসনওয়ারি মামলা করার যে পরিকল্পনা ছিল, তার অগ্রগতি কী?
সারা দেশেই মামলার জন্য বলা হয়েছে। আমি তো মনে করি, ২৯৮টি মামলাই হওয়া উচিত। তবে এ বিষয়ে বাদ সেধেছেন জেলা রিটার্নিং অফিসাররা। তারা কাগজপত্র দিচ্ছেন না।
মামলা করার সময়ই চলে যাচ্ছে। আর মাত্র তিন দিন মনে হয় সময় আছে। এখনো অধিকাংশ কাগজপত্র দিচ্ছে না, আর মামলা করব কখন। দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত কতটি মামলা করা যায়।