শেখ সেলিমের নাতির লাশ আসবে মঙ্গলবার

শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয় সিরিজ বোমা হামলায় আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিমের নাতি জায়ান চৌধুরী (৮) নিহত হয়েছে।

এ ঘটনায় জায়ানের বাবা মশিউল হক চৌধুরী প্রিন্স আহত হয়ে কলম্বোর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছেন শেখ সেলিমের মেয়ে শেখ আমেনা সুলতানা সোনিয়া। তিনি দুই ছেলে ও স্বামীকে নিয়ে শ্রীলঙ্কায় বেড়াতে গিয়ে পাঁচ তারকা হোটেলে উঠেছিলেন।

হামলার সময় হোটেলের নিচতলার রেস্তোরাঁয় সকালের নাস্তা করতে গিয়েছিলেন প্রিন্স ও তার বড় ছেলে জায়ান। আর ছোট ছেলে জোহানকে নিয়ে শেখ সোনিয়া ওই সময় হোটেলের কক্ষে ছিলেন।

সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুপাতো ভাই।

সোমবার সকালে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেয়াই ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন বনানীতে শেখ সেলিমের বাসায় যান। তিনি পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা জানান।

সেখানে তিনি সাংবাদিকদের কাছে বলেন, ‘শ্রীলঙ্কায় বোমা হামলায় ছোট্ট জায়ান চৌধুরীর মৃত্যু হয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার তার লাশ দেশে আনা হবে।’

এ সময় দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের বাসায় দেখা যায়। তারা সমবেদনা জানাতে এসেছেন। সকালে থেকেই বনানীর ২/এ রোডের ৯ নং বাসায় মাদ্রাসার ছাত্রদের কোরআন তেলাওয়াত করতে দেখা গেছে। পরিবারের সবার মাঝে শোকের নিস্তব্ধতা স্পষ্ট।

এর আগে গতকাল রোববার দুপুরে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ব্রিফিংয়ে বলেছিলেন, শ্রীলঙ্কার বোমা হামলার ঘটনার পর থেকে এক শিশুসহ দুই বাংলাদেশির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে তাদের নাম-পরিচয় তিনি সে সময় প্রকাশ করেননি।

ব্রুনাই সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানে প্রবাসীদের দেয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্যে নিজের স্বজনদের বোমা হামলার শিকার হওয়ার কথা প্রথম জানান।

তিনি বলেন, ‘শেখ সেলিমের মেয়ে, জামাই ও দুই বাচ্চা নিয়ে শ্রীলঙ্কায় ছিল। সেখানে মেয়ের জামাই প্রিন্স… ছেলে সাড়ে আট বছর…ওরাও গিয়েছিল… রেস্টুরেন্টে, সেখানে বোমা পড়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জামাই আহত হাসপাতালে, বাচ্চাটার এখনো কোনো খবর পাওয়া যাচ্ছে না যে সে কোথায় আছে। আপানারা একটু দোয়া করেন, যেন ওকে পাই।’

এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি (শেখ রেহানা) ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকী তার টুইটারে শ্রীলঙ্কার বোমা হামলায় পরিবারের সদস্য হারানোর কথা জানিয়েছেন।

তিনি লেখেন, ‘শ্রীলঙ্কার হামলায় আমি এক স্বজনকে হারালাম। এটা খুবই বিধ্বংসী। আশা করি, প্রত্যেকেই নিরাপদে আছেন। শ্রীলঙ্কার মানুষদের প্রতি সমবেদনা রইল।’

এর আগে গতকাল সকাল পৌনে ৯টা থেকে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর তিন গির্জা, চারটি অভিজাত হোটেলসহ অন্তত ৮টি স্থানে ভয়াবহ বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এতে এখন পর্যন্ত ৩৫ বিদেশিসহ ২৯০ জন নিহত ও ৫ শতাধিক আহত হয়েছেন।

২০১৩ সালে তামিল বিদ্রোহীদের সঙ্গে শ্রীলঙ্কান সরকারের দীর্ঘ ১০ বছরের গৃহযুদ্ধের অবসান হয়। এরপর শ্রীলঙ্কায় এ ধরনের বড় কোনো হামলার ঘটনা এই প্রথম ঘটল।

হামলার পর দেশটিতে কারফিউ জারি করা হয়েছে। জড়িতদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে ২৪ সন্দেহভাজনকে আটকের কথা জানিয়েছে কলম্বোর পুলিশ।