গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ যশোরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ফুসে উঠেছে উপশহর বাসী

jessore map

যশোর হাউজিং এস্টেট কর্তৃক ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে উপশহরের রাস্তা ও ড্রেন নির্মানের নামে উপশহরবাসীকে যে ক্ষতিগ্রস্থ করার প্রতিবাদে রোববার সকালে বি-ব্লক বাজারে উপশহর নাগরিক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে গনসমাবেশের আয়োজন করা হয়। এসময় উপশহর নাগরিক ঐক্য পরিষদ আয়োজিত গণসমাবেশে হাউজিং এস্টেটের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী দীপক কুমার সরকারে দুনীতি তুলে ধরা হয়।

এর আগে শনিবার রাতে ৭ সদস্য বিশিষ্ট নাগরিক ঐক্য পরিষদের কমিটি গঠন করা হয়।

বি-ব্লক বাজারে আয়েজিত সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১৯৬৩ সালে সরকারি কর্মচারিদের বসবাসের জন্য সরকার মাষ্টার প্লান অনুযায়ি হাউজিং এস্টেট তৈরি করেন। পরবর্তিতে দেশ স্বাধীনের পর সাধারণ জনগনকে এটা বরাদ্দ দয়া হয়। একসময় উপশহর এলাকা অবহেলিত ছিল। এখানে মানুষ ভয়ে বসবাস করতে চেত না। এছাড়াও ছিল পার্শ্ববর্তী মানুষের অত্যাচার নির্যাতন। যারা এখানে বাসবাস করতো তারা পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষের অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করেই বাস করতেন। উপশহরে মানুষ যখন পাশ্ববর্তী এলাকার মানুষের অত্যাচার নির্যাতনের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ হয়ে ঘুরে দাড়াতে শেখে তখন উপশহরে শান্তিপূর্ন ভাবে বসবাসের অবস্থা সৃষ্টি হয়। ওই সময় ১৬ টাকা করে পৌনে ২ কাঠার প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়। অনেকে এককালিন টাকা পরিষদ করে প্লট ক্রয় করেন আবার অনেকে কিস্তিতে বাড়ি বরাদ্দ নেন। এভাবে যখন উপশহর এলাকা শহরের যে কোন এলাকার চেয়ে বসবাসের জন্য প্রসিদ্ধ হয়ে উঠে ঠিক সেই সময় থেকে উশহরের জমির মূল্য বৃদ্ধি করা হয়।

নেতৃবৃন্দ বলেন, আর এই সুযোগে হাউজিং এস্টেটের দুর্নীতিবাজ কতিপয় কর্মকর্তা কর্মচারিরা গোপনে প্লট তৈরি করে দুর্নীতির মাধ্যমে বিভিন্ন মানুষের কাছে বিক্রি করে কোটিপতি বনে গেছে। বর্তমানে উপশহর এলাকা ঘনবসতি পূর্ন ও প্রস্দ্ধি এলাকা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। সেই ১৬ টাকার পৌনে দুই কাঠার বাড়ির মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে এখন হয়েছে কাঠা প্রতি আট লাখ টাকা। যা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। এখনো পর্যন্ত উপশহর এলাকার প্রায় তিনশ বাড়ি রেজিষ্ট্রি করা হয়নি। বসবাসকারিদের দাবি ১৬ শ টাকার বাড়ি ৪০ হাজার এরপর ৩ লাখ ও বর্তমানে প্রতিকাঠা আট লাখ করা হয়েছে। এতো টাকা দিয়ে তাদের পক্ষে বাড়ি কেনা সম্ভব নয়। তাদেরকে ৩ লাখ টাকায় কিস্তি করে বাড়ি দেয়া হোক। তা না হলে পরিবার পরিজন নিয়ে তাদেরকে রাস্তায় দাড়াতে হবে।

বক্তারা বলেন, দীপক কুমার সরকার হাউজিং এস্টেটের উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর দায়িত্বে রয়েছে প্রায় ৯ বছর (২৯.০৯.১০)। এসময়ে নড়াইল, মাগুরা, মাদারিপুরসহ বেশ কয়েক জেলায় জমি অধিগ্রহন করে প্লট তৈরি করে দুর্নীতি মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা। সম্প্রতি উপশহরে রাস্তা ড্রেন নির্মানের জন্য ১৫ কোটি টাকার টেন্ডার হয়। এই টেন্ডারেও তিনি প্রায় দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। টেন্ডারকে কেন্দ্র করে দীপক কুমার সরকার উপশহরের বাড়ির বাসিন্দাদের সীমানা প্রাচীরসহ বাড়ি ঘর ভাংচুর করছে। অথচ বাড়ির মালিকদেরকে লিখিত কোন নোটিশ দেয়ানি। আর ভাংচুর করার ক্ষেত্রেও স্বজন প্রীতি করা হচ্ছে বলে উপশহরের বাসিন্দাদের অভিযোগে জানা।

বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, হাউজিংয়ের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী দীপক কুমার সরকার উপশহর সিব্লকের বাসিন্দা জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান বজলুর রহমানের বাড়ির সীমানা প্রাচীর ভাঙা হয়নি। খালি করা হয়নি সি-ব্লকের ১৯১ নং বাড়ি সরকারি দখলকৃত জায়গা। এমনকি উপবিভাগীয় প্রকৌশলী দীপক কুমার সরকার বাড়িটির সীমানাও মাপজোপ করেনি।

বক্তারা বলেন, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাড়ির মালিক একজন মুক্তিযোদ্ধা। গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ। ছেলেরা সরকারি উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা। একারণে দীপক কুমার সরকার ওই বাড়ির সীমানায় ভেড়েনি। বাড়ি ঘর ছাড়া দীপক কুমার সরকার উপশহরের সেন্ট্রাল ড্রেন নির্মানে দুর্নীতি ও স্বজন প্রীতির আশ্রয় নিয়েছে। উপশহর ঢাকা রোড কবরস্থানের উত্তর পাশ্বের ড্রেন নিমাণে দুর্নীতি করেছেন দীপক কুমার সরকার। ওই স্থানে কথিত চৌগাছা ম্যাচ নামের বাড়ির সামনে ড্রেন ওয়াইডনেছ কমিয়ে দেয়া হয়েছে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে। কথিত চৌগাছা ম্যাচ নামের বাড়িটির পূর্ব পশ্চিম পাশের ড্রেনের ওয়াইডনেছ ঠিক থাকলেও উৎকোচের বিনিময়ে ওয়াইডনেছ কমিয়ে মাঝখানে বাড়িটির দখলকৃত সরকারি জায়গা থেকে উচ্ছেদ করা হয়নি। আর দীপকের এসব অবৈধ কাজের সহোযোগিতা করছেন এলাকার চিহ্নিত কতিপয় ব্যক্তিরা। তারাও দীপকের দুর্নীতির সহোযোগী। এছাড়াও উপশহরের বাড়ির নামজারির অনুমতি ফি, বাড়ি ভাঙার অনুমতি ফি, অবৈধ ভাবে আদায়কৃত বিবিধ কর বাতিলসহ, বাড়ির নিরাপত্তা প্রাচীর দেওয়ার অনুমতি দিতে হবে। এসব দাবি নামাসহ উপশহর নাগরিক কমিটির নেতৃবৃন্দ জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ যশোর অফিসের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী দীপক কুমার সরকারের দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান মন্ত্রী বরাবর দ্রুত স্বারক লিপি প্রদান করবে।