প্রয়াত ভাষাসৈনিক, নাট্যকার, অভিনেতা ও শিক্ষক অধ্যাপক মমতাজউদদীন আহমদের দ্বিতীয় জানাজা সোমবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানাজায় সমাজের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
জানাজার পর এই কীর্তিমান সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান রাজনীতিবিদ, মন্ত্রী, নাট্যকার, নেতা, লেখক ও সংস্কৃতি অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। পরে অধ্যাপক মমতাজউদদীনকে দাফনের জন্য তার পরিবারের সদস্যরা মরদেহ নিয়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হন। খবর বাসসের
জানাজার পর প্রয়াত অধ্যাপক মমতাউদদীনের ছেলে তিতাস মাহমুদ জানান, রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলারহাট উপজেলার বজরারটেক গ্রামে তার বাবাকে দাফন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘আমার বাবা তার কর্মের জন্য সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালবাসা পেয়েছেন। এ জন্যে পরিবারের পক্ষ থেকে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা।’
তিতাস আরও বলেন, বাবার নির্মিত ও অভিনীত সব নাটক ও চলচ্চিত্র জাতীয় আর্কাইভে সংগ্রহ করা হলে তার কর্ম সম্পর্কে ভবিষৎ প্রজন্ম জানতে পারবে।
অধ্যাপক মমতাজউদদীন আহমেদের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক শোকবার্তায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, দলের কেন্দ্রীয় নেতা অসীম কুমার উকিল এমপি, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, সংস্কৃতিজন রামেন্দু মজুমদার, নাট্যজন মামনুর রশীদ, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ও লেখক মফিদুল হক, কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, অভিনেতা খায়রুল আলম সবুজ, কবি আসাদ মান্নানসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশা এবং সংস্কৃতি অঙ্গনের ব্যক্তি ও অভিনেতা-নাট্যকারগণ জানাজায় অংশ নেন এবং শেষ শ্রদ্ধা জানান।
শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ‘অধ্যাপক মমতাজউদদীন আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামী ব্যক্তিত্ব। তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে কাজ করেছেন শুরু থেকে। সংস্কৃতি জগতের এই উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব আমাদের নাটক, চলচ্চিত্রসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রকে সমৃদ্ধ করে গেছেন। তার মৃত্যুতে অপূরণীয় ক্ষতি হলো।’
রামেন্দ্র রামেন্দু মজুমদার বলেন, ‘অধ্যাপক মমতাজউদদীন বহুমুখী প্রতিভাধর ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন শিক্ষক, অভিনেতা, নাট্যকার, নির্দেশক ও সুবক্তা। স্বাধীনবাংলা বেতার কেন্দ্রে তার সঙ্গে আমার কাজ করার সৌভাগ্য হয়েছে। তার অভিনিত নাটকগুলো জাতীয় আর্কাইভে সংগ্রহ করা উচিত।’
মামুনুর রশীদ বলেন, ‘অসীম প্রভিতাধর ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক মমতাজউদদীন। তার মৃত্যু আমাদের সংস্কৃতি জগতের জন্য এবং সকলের জন্যই বেদনাদায়ক।’
দেশের কীর্তিমান অভিনেতা ও নাট্যকার অধ্যাপক মমতাজউদদীন আহমেদ দীর্ঘদিন রোগ ভোগের পর রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার মারা যান। রোববার রাতে মীরপুর রূপনগরে মদিনা মসজিদে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।