কোপা আমেরিকার ফাইনাল : আজ ব্রাজিলের মুখোমুখি পেরু

অনেকের চোখে কোপা আমেরিকার সব আকর্ষণ শেষ হয়ে গেছে সেমিফাইনালেই। শেষ চারে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনাকে ২-০ গোলে হারিয়ে এখন ফাঁকা মাঠে গোল দেয়ার অপেক্ষায় স্বাগতিক ব্রাজিল! রিও ডি জেনিরোর ঐতিহাসিক মারাকানা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় আজ রাত ২টায় কোপার ফাইনালে পেরুর মুখোমুখি হবে সেলেকাওরা। গ্রুপপর্বে ব্রাজিলের কাছে পেরুর ৫-০ গোলে উড়ে যাওয়ার স্মৃতি এখনও টাটকা।

ব্রাজিল সমর্থকরা ভাবতেই পারেন পেরু কী আর এমন প্রতিপক্ষ! কিন্তু ২০১৬ কোপা আমেরিকার দুঃস্মৃতি মনে থাকলে ভুলেও কেউ এভাবে ভাববেন না। সেবার এই পেরুর কাছে হেরেই গ্রুপপর্ব থেকে ছিটকে পড়েছিল ব্রাজিল। ফিফা র‌্যাংকিংয়ে ২১ নম্বরে থাকা পেরুকে ফাইনালে পেয়ে তাই শিরোপা নিশ্চিত বলে ধরে নিচ্ছে না র‌্যাংকিংয়ের তৃতীয় সেরা দল ব্রাজিল।

পেরুকে সমীহ করার যথেষ্ট কারণ আছে ব্রাজিলের। গ্রুপপর্বে জয়ের মুখ না দেখলেও দুই তৃতীয় সেরা দলের একটি হয়ে নকআউট পর্বে পা রাখার পর আর পেছন ফিরে তাকায়নি পেরু। কোয়ার্টার ফাইনালে কোপার সফলতম দল উরুগুয়েকে টাইব্রেকারে হারানোর পর সেমিফাইনালে গত দু’বারের চ্যাম্পিয়ন চিলিকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে মারাকানার মঞ্চে উঠে এসেছে তারা।

চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ৪৪ বছর পর কোপার ফাইনালের দেখা পেয়ে পেরু এখন দারুণ আত্মবিশ্বাসী। ১৯৭৫ সালে নিজেদের সর্বশেষ ফাইনালে কলম্বিয়াকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল তারা। এর আগে ১৯৩৯-এর আসরে প্রথম শিরোপা জিতেছিল পেরু।সেবার পাঁচ দলের টুর্নামেন্টে কোনো ফাইনাল ছিল না।

অর্থাৎ ফাইনালে কখনও হারেনি পেরু! আজ তাদের সামনে তৃতীয় শিরোপার হাতছানি। অন্যদিকে ব্রাজিলের সামনে নবম শিরোপার হাতছানি। এর আগে ১৯ বার কোপার ফাইনালে খেলে ১১ বারই হেরেছে সেলেকাওরা! ২০০৭ সালে সর্বশেষ মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট উঠেছিল ব্রাজিলের হাতে।

ওপরের সব পরিসংখ্যান যেমন সত্যি, তেমনি এটাও সত্যি ব্রাজিল আজ পরিষ্কার ফেভারিট। গোটা আসরে সর্বোচ্চ ১০ গোল কারার বিপরীতে এখনও কোনো গোল হজম করেনি তিতের দল। আক্রমণভাগে নেইমারের অনুপস্থিতি অনুভূত হতে দিচ্ছেন না জেসুস, ফিরমিনোরা। তবে ব্রাজিলের ফাইনালে উঠে আসার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা জমাট রক্ষণের।

গোল হজম না করার দুর্দান্ত রেকর্ড ফাইনালেও অক্ষত রাখতে চান ব্রাজিল মিডফিল্ডার কাসেমিরো, ‘কোনো গোল হজম না করে টুর্নামেন্ট শেষ করা আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। ডিফেন্ডারদের পাশাপাশি আক্রমণভাগের খেলোয়াড়রাও রক্ষণে সাহায্য করছে। এটাই মূলত ব্যবধান গড়ে দিচ্ছে।’

গ্রুপপর্বে পেরুকে উড়িয়ে দিলেও ফাইনালে কঠিন চ্যালেঞ্জ দেখছেন কাসেমিরো, ‘এটা ফাইনাল। হলে ভালো কিন্তু আমরা আরেকটি গোল উৎসব আশা করছি না। ভুলেও ভাবছি না যে, এরই মধ্যে আমরা জিতে গেছি। ভালো খেলেই আমাদের জিততে হবে। উরুগুয়ে ও চিলির মতো দলকে বিদায় করে দিয়েছে পেরু। অবশ্যই তাদের সমীহ করতে হবে।’

পেরুর আর্জেন্টাইন কোচ রিকার্ডো গার্সিয়াও কঠিন লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি দিলেন, ‘যখন আপনি ফাইনালে উঠবেন, আপনাকে জেতার চেষ্টা করতে হবে। এর বাইরে কোনো বিকল্প নেই। ব্রাজিলকে হারানোর মতো খেলোয়াড় আমাদের আছে। নিজেদের যোগ্যতায় আমরা এতদূর এসেছি।’