কুষ্টিয়ায় হত্যা মামলায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৬ জনের যাবজ্জীবন

কুষ্টিয়ায় নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার রায়ে দুই সহোদরসহ পাঁচ আসামির ফাঁসি, ছয়জনের যাবজ্জীবন ও ছয়জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডসহ প্রত্যেকের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছে আদালত।

বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় কুষ্টিয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতের বিচারক মুন্সী মো. মশিউর রহমান জনাকীর্ণ আদালতে আসামিদের উপস্থিতিতে চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন— জেলার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে মাসুদ (৩৮), আনছার আলীর ছেলে পারভেজ (৪৩), সৈয়দ আলীর ছেলে ফজলুর রহমান (৫৫), সহোদর হবিবর রহমান (৫২) ও সরোয়ার হোসেন (৩৯)।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ছয় আসামি হলেন— বিল্লাল হোসেন (৪২), মঞ্জু (৩৪), সোহেল রানা (৩৮), রমিজ আলী (৪০), মতিয়ার রহমান (৫০) ও কবির হোসেন (৪৩)। এছাড়া মামলার অপর আসামি ভুট্টো, রকি, এনায়েত ও সালামকে ৩ বছর এবং নান্নু ও ফরিদকে সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ডসহ প্রত্যেকের ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।

আদালত সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ২০ ডিসেম্বর বিকেলে মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রভাবশালী দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ সময় নুরুল ইসলাম (৫৫) নামের একজন কৃষক নিহত হন। ঘটনার পর নিহতের ছেলে শাহিনুর রহমান সজিব বাদী হয়ে ২০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫/৬ জনকে আসামি করে মিরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্তের পর ২০১৫ সালের ৩০ এপ্রিল মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে দঃবিঃ ৩০২, ৩০২/৩৪, ৩৩৪ ও ৩২৫ ধারায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ।

মামলাটির চার্জ গঠনসহ দীর্ঘ সাক্ষ্য শুনানী শেষে কৃষক নুরুল ইসলাম হত্যায় আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভবে প্রমাণিত হওয়ায় বুধবার এই রায় ঘোষণা করেন আদালত। মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তদের ধার্যকৃত প্রত্যেকের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা পরিশোধ না করলে স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে তা পরিশোধ করতে বলা হয়েছে এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্তদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে বলে নির্দেশ দেন আদলত। একই সাথে এ মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি তরিকুল, আকরাম, আশরাফ, ইমরান ও ছালামদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়। রায় ঘোষণাকালে আদালতে উপস্থিত মামলার বাদী শাহিনুর রহমান সজিব এই রায়ের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেন।