যশোরের মণিরামপুরে গৃহবধূ সুরাইয়া খাতুন খুকি হত্যায় স্বামী মনিরুল ইসলামকে বুধবার যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ বছর সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন যশোরের স্পেশাল জজ আদালতের জজ (জেলা জজ) বিচারক শেখ ফারুক হোসেন। দন্ডিত মনিরুল ইসলাম মণিরামপুর উপজেলার চাকলা গ্রামের হাসেন আলীর গাজীর ছেলে।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০১০ সালের নবেম্বর মনিরুল ইসলামের সাথে সুরাইয়া খাতুন খুকির বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক মাস পরে মনিরুল তার স্ত্রী খুকিকে ভারতের মুম্বায় নিয়ে যেতে চাইলে সে যেতে বাধা দেয়। খুকি বিষয়টি তার পরিবারের সদস্যদের জানিয়ে দেয়। এতে মনিরুল ও তার পরিবারের সদস্যরা খুকির উপর চরম ভাবে ক্ষিপ্ত হয়। খুকির উপর তার শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন শুরু করে। ২০১১ সালের ১ সেপ্টেম্বর রাতে মনিরুল তার স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে যায়। রাতে খাওয়া-দাওয়া করে মনিরুল তাকে সাথে নিয়ে বাড়ি চলে আসে। গভীর রাতে মনিরুলের ভাই জিন্নাত আলী খুকির পিতার বাড়িতে যেয়ে সংবাদ দেয় পুকুরে গোসল করতে যেয়ে সে পানিতে ডুবে মারা গেছে। পরদিন মনিরুলের চাচাত ভাই মহিউদ্দিন মণিরামপুর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেন। পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়না তদন্তের জন্য লাশ যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। পরে খুকির পিতা কিসমত চাকলা গ্রামের আব্দুল মান্নান খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন খুকিকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর পুকুরে ফেলে পানিতে ডুবে মারা গেছে বলে প্রচার করে।
এ ব্যাপারে তিনি ২০১১ সালের ১৭ সেপ্টেম্ববর মণিরামপুর থানায় চারজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলার তদন্ত শেষে নিহতের স্বামী মনিরুলকে অভিযুক্ত ও অপর তিনজনের অব্যহতি চেয়ে আদালতে চার্জশিট দেন মণিরামপুর থানার তৎকালিন ওসি ছয়রুদ্দীন আহম্মেদ।
এ মামলার দীর্ঘ স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছর সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন। সাজাশ্রাপ্ত মনিরুল ইসলাম কারাগারে আটক আছে। সরকার পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেছেন বিশেষ পিপি এসএম বদরুজ্জামান পলাশ।