বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ধীর গতির কারনে পাসপোর্টযাত্রী নাজেহাল হচ্ছে। প্রতিদিন ইমিগ্রেশন ডেস্ক থেকে শুরু করে প্রচন্ড রৌদ, কখনো কখনো বৃষ্টি উপক্ষো করে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় ভারত গামী পাসপোর্টযাত্রীদের। আগে এর চেয়ে বেশী যাত্রী ভারতে প্রবেশ করলেও এমনটি দেখা যায়নি। এতে করে পাসপোর্ট যাত্রীদের অভিযোগ এ চেকপোষ্টে পাসপোর্টযাত্রীদের সেবার মান চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক পেসেঞ্জার টার্মিনালে কোন সেবা পাচ্ছে না যাত্রীরা। টার্মিনালের বাইরে দাঁড়িয়ে রোদ ও বৃষ্টিতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ভারত গামী পাসপোর্টযাত্রীদের।
অভিযোগ উঠেছে ভারতগামী পাসপোর্টযাত্রীদের বেনাপোল ইমিগ্রেশন লাইনে দাঁড়িয়ে নানাবিধ প্রশ্ন করে সময় ক্ষেপন করে। আবার তাদের সমস্যা দেখিয়ে দীর্ঘ সময় বসিয়ে রেখেও পরে অর্থের বিনিময়ে ছেড়ে দেয়। এমন অভিযোগ উঠেছে চেকপোষ্ট এলাকায়।
ঢাকার বাসিন্দা সুমন, বলেন আমার পাসপোর্টে কোন সমস্যা নাই তাকে ইমিগ্রেশন পুলিশ বলছে আপনার পাসপোর্টে সিঙ্গাপুর মালায়েশিয়ার ভিসা কেন? এটা দেখতে হবে। এই বলে কালক্ষেপন করে ৫ হাজার টাকা উৎকোচ আদায় করে আমাকে ছেড়ে দেয়।
এ ছাড়া এখানকার নিত্য নৈমিত্তিক অভিযোগ পাসপোর্টের মেয়াদ নাই। কমপক্ষে তিন মাস থাকতে হবে এমন অভিযোগ করে ইমিগ্রেশন পুলিশ আদায় করছে উৎকোচ।
আবার বেনাপোল স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষ পাসপোর্ট যাত্রীদের সেবা দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক পেসেঞ্জার টার্মিনাল ভবন তৈরী করলেও সেখানে কোন সেবা পাচ্ছে না যাত্রীরা। এমন অভিযোগ করেন শত শত পাসপোর্ট যাত্রী। ভারত গামী পাসপোর্টযাত্রীরা বলেন, আমরা বৈধ পথে ভারত যাই। এখানে টার্মিনাল চার্জ বাবদ যে টাকা আদায় করা হচ্ছে তা সম্পুর্ন বেআইনি। আমাদের নিকট থেকে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা নিয়ে একটি রশিদ ধরিয়ে দিচ্ছে তাতে লেখা আছে ৪২.৭৫ টাকা। ওই রশিদ দেওয়া হচ্ছে আমরা টার্মিনালে বসতে পারব। টয়লেট, পানিসহ এখানে হোটেল রেস্তোরা থাকবে সেই সুবিধা পাব। কিন্তু কিছু পাচ্ছি না। বরং টার্মিনাল চার্জ ৫০ টাকা দিয়ে রৌদ্রে এসে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। আবার বৃষ্টিতে শেয়ালের মত ভিজতে হচ্ছে। সবথেকে বেশী অসুবিধা হচ্ছে রোগি, শিশু, বয়স্ক ও নারীদের। এরা এভাবে লাইনে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকে কেউ কেউ মাথা ঘুরে পড়ে যাচ্ছে।
বেনাপোল চেকপোষ্টে পাসপোর্ট যাত্রীদের অভিযোগ আমরা অযথা টার্মিনাল সেবার নামে ৫০ টাকা ট্যাক্স দিচ্ছি। আমাদের টার্মিনাল হয়ে প্রবেশের প্রয়োজন নেই। আগে যে ভাবে আমরা কাস্টমস ইমিগ্রেশনের প্রবেশ করতাম সেই ভাবে করব। এ টার্মিনালে চিড়িয়াখানার কোন জন্তু নেই বা কোন সিনেমা দেখাচ্ছে যে এর জন্য ৫০ টাকা চার্জ দিতে হবে। আমাদের এরা জিম্মি করে ফেলেছে। আমাদের নিটক থেকে জোর করে এ টাকা আদায় করা হচ্ছে। যা পৃথিবীর কোন রাষ্ট্রে নেই। পাশ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতের এধরনের কোন কার্যক্রম নেই। এমনকি সেখানে ভ্রমন করও নেই।
এ ব্যাপারে ইমিগ্রেশন ওসি তদন্ত মাসুম বিল্লাহ বলেন, আমরা যাত্রীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি । কোন প্রকার অনিয়ম হচ্ছে না।
এর আগেও যাত্রী এর চেয়ে বেশী গেছে এরকম অবস্থা দেখা যায়নি এ প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা কাজের স্বচ্ছতার জন্য যার পাসপোর্ট তাকে লাইনে দাঁড়িয়ে করাচ্ছি। তাতে সময় যে বেশী লাগছে না। তবে লাইনে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত এবং আগে এরকম অবস্থার সৃষ্টি হয়নি এসব তিনি এড়িয়ে যান।
বৃৃহস্পতিবার ও শুক্রবার বেনাপোল চেকপোষ্টে গিয়ে দেখা গেছে সেখানে এক কিলোমিটার জুড়ে লাইনে দাড়িয়ে পাসপোর্ট যাত্রীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।