রাবির হলগুলোতে বিশুদ্ধ পানির প্ল্যান্ট চায় শিক্ষার্থীরা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ১৭টি আবাসিক হলের মধ্যে একমাত্র শাহ্ মখদুম হলে বিশুদ্ধ পানির প্ল্যান্ট থাকলেও বাকি ষোলটি হলে নেই কোনো পানির প্ল্যান্ট। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিযোগের শেষ নেই। বিশুদ্ধ পানি পেতে আবাসিক হলগুলোতে পানির প্ল্যান্ট চায় হলের শিক্ষার্থীরা ।

নবাব আব্দুল লতিফ হলের শিক্ষার্থী রবিন খান বলেন, হলের ভিতরে একটি টিউবওয়েল আছে। সম্প্রতি একটি সাবমার্সিবল পাম্প বসানো হয়েছে। একটি টিউবওয়েল থেকে হলের সব আবাসিক শিক্ষার্থীদের পানি সংগ্রহ কষ্টকর। তা এটা পুরোপুরি নিরাপদ না। যদি বিশুদ্ধ পানির প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয় তাহলে আমরা বিশুদ্ধ পানি পাব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মন্নুজান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী শারমিন ইসলাম কণা বলেন, আমাদের হলে বিশুদ্ধ পানির কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই আমাদের বাধ্য হয়ে এসব পানি খেতে হয়। আমরাও চাই হলে বিশুদ্ধ পানির প্ল্যান্ট বসানো হোক।

মাদার বখশ্ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সিয়াম আহমেদ সোহেল বলেন, হলে তিন ব্লকে চারটি টিউবয়েল আছে যার দুটিই নষ্ট। হলের পানি পান করার অনুপযোগী। টিউবলের পানিও সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ না। ডাইনিংয়ে খাওয়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সরবরাহকৃত পাইপলাইনের পানি ফিল্টারিং না করেই সরাসরি আমাদের পান করতে দেয়া হয়। যা পান করার ফলে বিভিন্ন সময় পাকস্থলির সমস্যা দেখা দেয়। হলে বিশুদ্ধ পানির প্ল্যান্ট স্থাপন করা হলে আমরা নিশ্চিন্তে পানি পান করতে পারি।

বিশুদ্ধ পানির প্ল্যান্ট তৈরি করা হলে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমবে বলে মনে করেন বিশ^বিদ্যালয়ের চিকিৎসা কের্ন্দের প্রধান চিকিৎসক তবিবুর রহমান। তিনি বলেন, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে রাজশাহীর পানি বেশি ভালো না, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে যে পানিগুলো সাপ্লাই করা হয়ে থাকে তার তুলনায় ক্যাম্পাসের পানি অনেকটা ভালো। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পানি সরবরাহ ব্যবস্থা রয়েছে। তবে অনেক সময় পানিতে ময়লা আবর্জনা দেখা যায়। অনেক সময় শিক্ষার্থীরা ডায়রিয়া, কলেরাসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নেয়ার জন্য চিকিৎসাকেন্দ্রে আসে। তাই পানি ফিল্টারিং করে পান করলে স্বাস্থ্যঝুঁকির কোন সম্ভাবনা থাকবে না।

শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক লায়লা আরজুমান বানু বলেন,
শিক্ষার্থীদের এই দাবিটি যৌক্তিক। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা যেন পড়াশোনার ক্ষেত্রে কোন ধরণের প্রতিবন্ধকতার শিকার না হয়। আমি উপাচার্য এবং হল প্রাধ্যক্ষদের সাথে এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলব।
এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক রেজাউল করিম বকসী বলেন, শিক্ষার্থীদের এই দাবিকে স্বাগতম জানিয়ে আমরা উপাচার্যের সাথে কথা বলেছিলাম। তিনি আমাদের এই প্রস্তাবনা গ্রহন করেছেন। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি হলে সাবমার্সিবল পাম্প লাগানো হয়েছে। চলতি মাসে সমাবর্তন হওয়ায় কাজগুলো বন্ধ হয়ে আছে। ডিসেম্বরের মধ্যেই সকল হলে বিশুদ্ধ পানির ফিল্টারিং এর ব্যবস্থা করা হবে।