জাতিসংঘের যৌথ মিশনের চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ৪ দিনব্যাপী সুন্দরবন পরিদর্শন শুরু করেছে। বুধবার দুপুরে বাগেরহাটের মোংলার ফুয়েল জেটি থেকে প্রতিনিধি দলটি বন বিভাগের অত্যাধুনিক নৌযান বন বিলাসে চড়ে সুন্দরবনে যায়।
প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রয়েছেন বন বিভাগের উচ্চপদস্থ প্রতিনিধিরাও। আগামী শনিবার তাদের সুন্দরবন থেকে ফেরার কথা রয়েছে।
জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেস্কোর এবং প্রকৃতি রক্ষার বৈশ্বিক সংগঠন আইইউসিএনের একটি যৌথ মিশনের ২ জন পুরুষ ও ২ নারী পরিবেশবিদ টানা ৪ দিন ধরে সুন্দরবনে অবস্থান করবেন। সেখানে তারা পরিবেশগতভাবে হুমকির মুখে থাকা ওয়ার্ল্ড হেরিটেজে বনের জীববৈচিত্র্যের বর্তমান অবস্থান সরেজমিনে দেখবেন এবং তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করবেন।
জাতিসংঘের যৌথ মিশনের প্রতিনিধি দলটি দুপুরে মোংলায় সুন্দরবন বিভাগের রেস্ট হাউজে এসে পৌঁছলে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মাহমুদুল হাসান তাদের ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
প্রতিনিধি দলে রয়েছেন ইউনেস্কোর নয়াদিল্লি অফিসের প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট ফর ন্যাচারাল সায়েন্স বিভাগের মিস্টার গাই ব্রুক, ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সেন্টারের অ্যাকান নাকামুরা, আইইউসিএনের এলিনা অসিপভা ও অ্যান্ড্রো ওয়াইট।
জাতিসংঘের এই যৌথ মিশনটি সুন্দরবন পরিদর্শনের পাশাপাশি বনের আশপাশে অবস্থিত শিল্প-কলকারখানা বিশেষ করে বাগেরহাটের রামপাল, বরগুনার তালতলী ও পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নির্মিতব্য কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রভাব ছাড়াও আন্তর্জাতিক সমুদ্রবন্দর মোংলার পশুর চ্যানেলসহ অন্যান্য নদী খননের ফলে সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতির ওপর প্রতিবেশগত যে বিরূপ প্রভাব পড়বে তাও পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন করবেন।
এই যৌথ মিশনের দেয়া তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করেই জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটি সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতির ওপর প্রতিবেশগত হুমকির বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট প্রকাশ করবে।
এদিকে এই প্রতিনিধি দলের সুন্দরবন পরিদর্শনকে কেন্দ্র করে সুন্দরবন বিভাগের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিলসহ বনে অবাঞ্ছিত লোকজনের প্রবেশ ও সবল ধরনের বনজ-জলজ সম্পদ আহরণ বন্ধ রেখেছে বন বিভাগ।