বিএনপিপন্থি বুদ্ধিজীবী ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডাক্তার জাফরুল্লাহ বিএনপির স্থায়ী কমিটি থেকে বয়স্কদের সরিয়ে তরুণদের আনার পরামর্শ দিয়েছেন। বলেছেন, ‘যাদের হাত পা নড়ে না তাদেরকে দিয়ে হবে না। যুবকদেরকে কমিটিতে নিয়ে আসেন। আমাদের মতো বয়স্কদের দিয়ে হবে না। তরুণ যুবকদের দিয়ে হবে। তরুণদের দায়িত্ব দেন, দেখেন কী হয়।’
সোমবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের এক আলোচনা সভায় তিন এসব কথা বলেন।
জাফরুল্লাহ বলেন, ‘সারাদেশের বিএনপির অনেক কর্মী আছে এদের মধ্যে তরুণদের দায়িত্ব দেন, এগিয়ে নিয়ে আসেন। আমি আশা করি কোনো না কোনোদিন তারেক জিয়া প্রধানমন্ত্রী হবেন। কিন্তু এখন নাক গলানো বন্ধ করতে হবে। বিশ্বাস করো, তারেক এরা তোমাকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। এরা তোমাকে মুক্ত করবে, তোমার মাকে মুক্ত করবে।’
বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা ঘর ছেড়ে মাঠে রাজনীতি করেন। অধিকার আদায়ের জন্য নামেন। কওমি জুট মিলের শ্রমিকরা যেমন শীতের মধ্যে কম্বল জড়িয়ে রাস্তায় আন্দোলন করে আপনারাও সেরকম করেন। সুপ্রিম কোর্টের সামনে বসে যান। দেখেন না আমাদের বিচারপতিদের বুকে সাহস আসে কি না।’
বিএনপিপন্থি এই বুদ্ধিজীবী বলেন, ‘আমাদের সবাইকে মাঠে নামতে হবে খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য। অন্যায়ভাবে খালেদা জিয়াকে জেলে নিয়ে রাখা হয়েছে, তাকে জামিন দিচ্ছে না।’
ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ঢাকা সিটিতে নির্বাচন খুব ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়ে করতে হবে।’ এ নির্বাচনে বিএনপিকে জয়ী করতে সবাইকে একত্রে কাজ করারও আহ্বান জানান তিনি।
খালেদা জিয়ার জামিন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের বিচারপতিরা বঙ্গবন্ধু বঙ্গবন্ধু বলে ফ্যানা তোলেন। বিভিন্ন উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়ায় যান। মায়াকান্না করেন। তারা কিন্তু বঙ্গবন্ধুর অসামাপ্ত আত্মজীবনী পড়ে দেখেননি। খালেদা জিয়া জেলখানায় একাকিত্বে রয়েছেন। তাকে একা একা রাখা হয়েছে। আজকে যদি বিচারকরা তাদের চোখে দেখতে পেতেন, বিবেক নিয়ে থাকতেন, জেল কর্তৃপক্ষকে সুয়োমুটো করতেন।’
বিশিষ্ট এই চিকিৎসক বলেন, ‘জেলখানায় খালেদা জিয়া আছেন একাকিত্বে। বয়সের কারণে তার বিভিন্ন রোগ তো আছেই। তার বড় রোগ হচ্ছে অবসাদে আছেন তিনি, একা একা আছেন তিনি। সে বিষয়ে কোনো মতামত দেওয়ার বিষয়ে কিছু বলেননি বিচারকরা। তারা (বিচারক) খালেদা জিয়ার মেডিকেল রিপোর্টটি ভালো করে দেখলেন না।’
‘খালেদা জিয়ার হাঁটুতে ব্যথা। হাঁটুর অপারেশন হয়েছে। এইটার জন্য সবচেয়ে বড় প্রতিকার হলো ফিজিও থেরাপি। উনার মূল রোগ ডায়াবেটিস। ডায়াবেটিসের বিষয়ে খেয়াল নেই। একটি অসমাপ্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে সাতজন মহামান্য বিচারপতি জামিন নাকচ করে দিলেন। বিচারপতিরা কোনো দলের না। তারা সবাই আমাদের জন্য। আমাদের অধিকার নিশ্চয়তা করার জন্য কাজ করবেন।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাবেক সহ-সম্পাদক ড. গোলাম রহমান প্রমুখ।