যশোরে বিড়াল উদ্ধারে দমকল বাহিনী

১৯ ঘণ্টা পর দমকল বাহিনীর সহায়তায় পোষা বিড়ালটি হাতে পেয়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েন নাজমা আহমেদ। তার চোখ দিয়ে ঝরে পড়ে আনন্দাশ্রু! পরম মমতায় বুকে জড়িয়ে ধরে আদর করতে থাকেন তার ‘মা’কে। পোষা বিড়ালটিকে তিনি ‘মা’ বলেই ডাকেন। রবিবার (৫ জানুয়ারি) সকালে বিড়ালটিকে সুস্থভাবে উদ্ধার করায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন যশোর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীদের।

নাজমা আহমেদ ও জাকির হোসেন দম্পতি যশোর শহরের পূর্ববারান্দিপাড়া এলাকার বাসিন্দা। নাজমা যেখানেই যান, সঙ্গে পোষা বিড়ালটিকে নিতে ভোলেন না। শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকালে এই দম্পতি যশোর জেনারেল হাসপাতালে যান সেখানে চিকিৎসাধীন এক আত্মীয়ের খোঁজ নিতে। তারা যখন হাসপাতালের তৃতীয় তলায় সেই আত্মীয়ের সঙ্গে কথা বলছিলেন, ঠিক সেই মুহূর্তে বিড়ালটি লাফ দিয়ে নিচে নেমে যায়। তখন তারা ঘটনাটি টের পাননি। বাড়ি ফেরার সময় দেখেন বিড়ালটি পাশে নেই। পরে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় খুঁজে না পেয়ে মনোকষ্টে বাড়ি ফেরেন।

এরপর আজ সকালে বিড়ালটি খুঁজতে বের হন তারা। জাকির হোসেন দেখেন- বিড়ালটি হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডের বিপরীত বিল্ডিংয়ে তিনতলায় একটি এয়ার কন্ডিশন মেশিনের বাইরে আটকে রয়েছে। এরপর তিনি যশোর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অফিসে গিয়ে কর্মকর্তাদের বিষয়টি বুঝিয়ে বলেন। সব শুনে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা হাসপাতাল কম্পাউন্ডে পৌঁছে যান। তারা মই লাগিয়ে নামিয়ে এনে নাজমা বেগমের হাতে বিড়ালটি তুলে দেন।

যশোর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘মানুষের কল্যাণ আর সেবাই আমাদের কাজ। আমরা বিড়ালটিকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে তার মালিকের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি এটিই আনন্দের বিষয়।’

জাকির হোসেন অরুণ জানান, বছর দুই আগে নাজমা বাসা থেকে শহরের হাইকোর্ট মোড়ে যাওয়ার পথে নর্দমার মধ্যে একটি বিড়ালছানা পড়ে থাকতে দেখেন। সেখান থেকে তুলে আনেন বিড়ালছানাটি। তারপর থেকে বিড়ালছানাটি আমাদের সঙ্গেই থাকে। আমাদের পরিবারেরই একজন হয়ে রয়েছে। বিড়ালটি আমাদের সন্তানের মতো।