জনসংখ্যা বাড়াতে হাঙ্গেরি সরকার মরিয়া

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ হাঙ্গেরিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির চেষ্টায় সরকার সন্তানহীন দম্পতিদের বিনামূল্যে আইভিএফ (ইন-ভিট্রোফার্টিলাইজেশন) চিকিৎসা দেবে। হাঙ্গেরীর দক্ষিণপন্থী জাতীয়তাবাদী প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান এই ঘোষণা দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের সরকার দেশটিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির চেষ্টা করছে। হাঙ্গেরিতে জন্ম হার খুবই কম, মাত্র ১.৪৮%। ইউরোপের অন্যান্য দেশে যেখানে অভিবাসন বাড়িয়ে জনশক্তির চাহিদা মেটানো হয়, সেখানে হাঙ্গেরির বর্তমান সরকার তার ঘোরতর বিরোধী। তারা চায় হাঙ্গেরিয়ানদের জন্মহার বাড়িয়েই এই সমস্যার সমাধান করতে হবে। গত চার দশক ধরে হাঙ্গেরির জনসংখ্যা কমছে। বর্তমানে দেশটির জনসংখ্যা ৯৭ লাখের সামান্য বেশি।

ভিক্টর অরবান গত বৃহস্পতিবার জন্মহার বাড়ানোর জন্য সরকারের নতুন নীতি ঘোষণা করেন। এর আগে গত ডিসেম্বরে তিনি দেশটির ছয়টি ফার্টিলিটি ক্লিনিক সরকারের ব্যবস্থাপনায় নিয়ে আসেন। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে সব সন্তানহীন দম্পতিকে বিনামূল্যে ফার্টিলিটি চিকিৎসা দেয়া হবে।

ভিক্টর অরবান আরও ঘোষণা করেছেন, যেসব নারী তিন বা তার অধিক সন্তান নেবেন, তাদের জন্য সরকার আয়কর মওকুফ করার কথা ভাবছে সরকার। যাদের চার বা তার অধিক সন্তান আছে, তাদের জন্য আয়কর মওকুফ করা হয়েছে এমাস থেকেই।

ভিক্টর অরবান বলেন, “যদি আমরা অভিবাসীদের পরিবর্তে হাঙ্গেরিয়ান শিশু চাই, এবং হাঙ্গেরিয়ান অর্থনীতি যদি প্রয়োজনীয় তহবিল জোগাতে পারে, তাহলে এর একমাত্র সমাধান পরিবার এবং সন্তান লালন-পালনের জন্য যত বেশি সম্ভব অর্থ ব্যয় করা।”

মি. অরবান ২০১০ সাল হতে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী। তিনি মূলত অভিবাসনের বিরোধিতাকেই তার নির্বাচনী প্রচারে প্রাধান্য দেন।

সম্মেলনে তিনি বলেন, “ইউরোপে যদি ভবিষ্যতে ইউরোপের মানুষই না থাকে এবং আমরা যদি এটাই নিয়তি বলে মেনে নেই, তাহলে আমরা আসলে জনসংখ্যা বিনিময়ের কথাই বলছি, ইউরোপীয় জনসংখ্যাকে অন্য জনসংখ্যা দিয়ে প্রতিস্থাপনের কথা বলছি। ইউরোপে অনেক রাজনৈতিক শক্তি আছে, যারা আদর্শগত কারণে বা অন্য কোন কারণে এটাই চায়।”

হাঙ্গেরির মতো আরও অনেক পূর্ব ইউরোপীয় দেশেও এই একই সমস্যা, জনসংখ্যা কমছে। এর কারণ মূলত দুটি: নীচু জন্ম হার, এবং ব্যাপক হারে তরুণদের অভিবাসন।

জন্ম হার বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে। যেমন পোল্যান্ডে প্রতিটি শিশুর জন্য সরকারের কাছ থেকে মাসে প্রায় একশো পাউন্ড ভাতা পান বাবা-মা।