চীনফেরত ৭ জন হাসপাতালে, বাকিরা ক্যাম্পে

করোনাভাইরাস আতঙ্কের মধ্যে চীনের উহান থেকে দেশে ফেরা ৩১৬ বাংলাদেশির মধ্যে সাতজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি ৩০৯ জনকে আশকোনায় হজ ক্যাম্পে রাখা হয়েছে।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে কর্মরত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ডা. শাহরিয়ার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বিমানবন্দরের কাছে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হওয়া সাতজনের মধ্যে চারজনের শরীরে জ্বর এবং বাকি তিনজনের সর্দি ছিল।

সংশ্লিষ্টরা জানান, উহান থেকে ফেরা ব্যক্তিরা আপাতত স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবেন না। বিমানবন্দর থেকে তাদের আশকোনা হজ ক্যাম্পে নেওয়া হয়েছে। সেখানে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআরের কোয়ারেন্টাইন (আলাদা) ব্যবস্থায় তাদের রাখা হবে। স্বাস্থ্যগত পরীক্ষার জন্য ১৪ দিন পর্যন্ত তাদের সেখানে রাখা হতে পারে। তারপর তাদের শরীরে করোনাভাইরাস নেই এটা নিশ্চিত হলে বাড়ি ফিরতে পারবেন তারা।

চীন থেকে ফেরত আসাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা প্রসঙ্গে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআরের পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘আমরা আশা করছি, ফেরত আসা বাংলাদেশিদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত কেউ নেই। তারপরও আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। হজ ক্যাম্পে তাদের রাখা হবে। সেখানে আমাদের চারটি মেডিক্যাল টিম থাকবে। সেখানে তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।’

এর আগে, শনিবার সকালে করোনাভাইেোসের উৎসস্থল চীনের উহান শহর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট সকালে দেশে ফেরেন ৩১৬ বাংলাদেশি।

বিমান বাংলাদেশে এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. মোকাব্বির হোসেন জানান, বেলা ১১টা ৫৩ মিনিটে বিজি ৭০০২ ফ্লাইটযোগে তারা ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।

গত শুক্রবার বিশেষ বিমানযোগে বাংলাদেশের নাগরিকদের ফেরত আনার অনুমতি দেয় চীনের বিমান কর্তৃপক্ষ।

চীনে করোনাভাইরাসে ১১ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। বেশিরভাগ আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছে হুবেই প্রদেশ ও তার রাজধানী উহানে। চীনে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়ে ২৫৯ জনে।

মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকে বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা হিসেবে ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। ঠিক কীভাবে ভাইরাসটি ছড়াচ্ছে এবং এটি কতটা মারাত্মক, তা বোঝার জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনের মানুষদের মধ্যে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং আমেরিকা, ফ্রান্স, জাপান, জার্মানি, কানাডা, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ভিয়েতনামসহ অন্যান্য দেশে মানবদেহের মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে।