বাঘারপাড়া ও খাজুরায় এসএসসি পরীক্ষা চলাকালীন রমরমা কোচিং বাণিজ্য!

সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকার সত্ত্বেও আইন অমান্য করে এসএসসি পরীক্ষা চলাকালীন যশোরের বাঘারপাড়ায় সর্বত্র চলছে রমরমা কোচিং বাণিজ্য। এর সাথে জড়িত রয়েছেন উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কতিপয় শিক্ষকেরা। এছাড়া সরকারি স্কুল-কলেজ ও এমপিওভূক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অর্থলোভী কিছু শিক্ষকেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, নিজ বাড়ি ও ভাড়া করা বাসায় নামে-বেনামে সুকৌশলে চালাচ্ছেন কোচিং বাণিজ্য। আর সেখানেই পালাক্রমে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে তাদের প্রাইভেট পাঠদান। কেউ কেউ ক্ষমতাসীন দলের নেতা সেজে কোচিং সেন্টার চালাচ্ছেন। প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব অবৈধ কার্যক্রম চলায় দরিদ্র শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সচেতন মহলের প্রতিনিধিরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার ও শনিবার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার পরিষদের আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের পাশে, মহিলা কলেজ গেট, দোহাকুলা বাজারের আশপাশ থেকে শিক্ষার্থীরা কোচিং শেষ করে বের হচ্ছে। এদিকে উপজেলার সদরের বাইরে রায়পুর কলেজিয়েট স্কুল ও বাজার, ভাটার আমতলা বাজার, দূর্গাহপুর বাজার, গাইদঘাট স্কুল বাজার, খাজুরা সরকারি কলেজের পাশে, বাসস্টান্ড, খাজুরা হাইস্কুল, গরু হাট চত্বরের পাশে, চিত্রা নদীর ওয়াকওয়ে এলাকা, মথুরাপুর জান্নাতের মোড়, ব্রীজঘাট, চন্ডিপুর মসজিদের পাশে, পার্বতীপুর বটতলা, লেবুতলা তেঁতুলতলা ও স্কুল বাজার, জহুরপুর কদমতলা ও তৈলকুপ বাজার, বেতালপাড়া বাজার, কেশবপুর শান্তির মোড়সহ আশপাশ থেকে কোচিং শেষ করে দলে দলে বের হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার প্রায় সব বিদ্যালয়ের কোন না কো শিক্ষক কোচিং বাণিজ্যের সাথে জড়িত রয়েছেন।
লক্ষ্য করা গেছে, ছোট্ট একটি রুমে অল্প পরিসরে এক ঘন্টার কোচিংয়ে ১০ থেকে ২৫ জন শিক্ষার্থীকে একত্রে পড়ানো হচ্ছে। এতে দায়সারা গোছের পাঠদান হলেও মূলত শিক্ষার কোন পরিবেশ নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থীদের কথা বলে জানা যায়, ১ ঘন্টা করে মাসে ১২ দিন তাদের পড়ানো হয়। তাদের কোচিং ফি বাবদ মাসে ৫’শত থেকে ১৫’শত টাকা করে দিতে হচ্ছে। কোচিংয়ের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, কি করবো কোচিংয়ে না পরলে পরীক্ষায় পাশ করবো কি ভাবে। ক্লাসে তো আর সব কিছু ভালোভাবে শিখানো হয় না। অভিভাবকেরা জানান, ক্লাসে তো আর সব পড়ানো হয় না। ভালো ফলাফলের জন্য বাধ্য হয়েই ছেলে-মেয়েদের কোচিংয়ে পড়তে দিতে হচ্ছে।
কোচিং পড়ানোর বিষয়ে একাধিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চাইলে তারা কোচিং পড়ানোর বিষয়ে স্বীকার করতে রাজি হননি। তবে অনেকেই বলেন, আমাদের অজান্তে কিছু কিছুু শিক্ষক তাদের বাসা বাড়ীতে গোপনে প্রাইভেট পড়িয়ে থাকেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আকরাম হোসেন খান বলেন, সরকারি নির্দেশ রয়েছে পরীক্ষা চলাকালিন সময়ে কেউ যদি কোচিং বাণিজ্য করে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানিয়া আফরোজ বলেন, সরকারি আইন মোতাবেক পরীক্ষা চলাকালিন সময়ে কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকার নির্দেশ রয়েছে। কোচিং চলছে এই ধরনের কোনো অভিযোগ এখনো পায়নি। তবে বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন অবশ্যই এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।