১৮ ফেব্রুয়ারিকে ‘জাতীয় শিক্ষক দিবস’ ঘোষণার দাবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ বুদ্ধিজীবী ড. শামসুজ্জোহার মৃত্যুবার্ষিকী ১৮ ফেব্রুয়ারিকে ‘জাতীয় শিক্ষক দিবস’ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

রোববার দুপুরে রাবির শহীদ ড. শামসুজ্জোহা চত্বরের পূর্ব পাশে ‘রাজশাহী ইউনিভার্সিটি একডুকেশন ক্লাব’র উদ্যোগে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তারা এ দাবি জানান।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, জোহা মানে আদর্শ, জোহা মানে চেতনা, জোহা মানে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। তিনিই প্রথম শিক্ষার্থীদের শিখিয়েছেন কিভাবে মাথা উঁচু করে বাঁচতে হয়। কিভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হয়। শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে জোহা নিজের জীবন বিসর্জন দিয়েছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা শহীদ জোহার আত্মত্যাগের কতটা মূল্য দিতে পেরেছি? জাতীয়ভাবে এখনো তার মূল্যায়ন পাইনি।

বক্তারা আরো বলেন, শহীদ জোহা আর বর্তমান সময়ের শিক্ষকদের আদর্শ যদি মেলাতে যাই দেখা যাবে তার আদর্শের কাছে কেউ নেই। জোহা বলেছিলেন ‘আমার ছাত্রের শরীরে গুলি লাগার আগে সে গুলি আমার বুকে লাগবে।’ বসন্তে সেই দিনে তার রক্তে এই ক্যাম্পাস রঞ্জিত হয়েছে। বর্তমানে শিক্ষকরা দলদাসে পরিণত হয়েছে। তারা পদ-পদবী পাওয়ার জন্য রাজনীতিতে ব্যস্ত থাকেন। শিক্ষার্থীদের অধিকারের চেয়ে রাজনৈতিক সুবিধা তাদের কাছে বেশি গুরুত্ব পায়। মানববন্ধন থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারিকে অনতিবিলম্বে জাতীয় শিক্ষক দিবস ঘোষণার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।

মানববন্ধনে ‘এক দফা এক দাবি জাতীয় শিক্ষক দিবস ১৮ফেব্রুয়ারি’, ‘জোহা দিবসকে শিক্ষক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হোক’, ‘জোহার আত্মত্যাগ বৃথা যেতে পারেনা’ ইত্যাদি স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।

রাবি একডুকেশন ক্লাবের সদস্য রেজওয়ানুল আলম রিজভীর সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের সদস্য শামস আল গালিব, ফুয়াদ পাবলো, শাহিনুর খালিদ, শিক্ষার্থী মাহমুদ সাকী।

মানববন্ধনে সংগতি জানিয়ে বক্তব্য দেন, রাকসু আন্দোলন মঞ্চের আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ অন্তর, রাবি শাখা বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি রনজু হাসান, ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মহাব্বত হোসেন মিলন প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, ১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্থানি সেনাবাহিনীর নির্মম নির্যাতনে শহীদ হন তৎকালীন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও রসায়ন বিভাগের শিক্ষক ড. সৈয়দ মুহাম্মদ শামসুজ্জোহা। প্রতিবছর এই দিনটিকে রাবিতে শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন যাবত দিনটিকে জাতীয় শিক্ষক দিবস হিসেবে ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।