করোনা আক্রান্তের খবর গোপনের অভিযোগ ফখরুলের

mirza fokrul
ফাইল ছবি

করোনাভাইরাসে দেশে তিনজন আক্রান্তের খবর সরকার প্রকাশ্যে আনার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে বিদেশি অতিথিরা আসতে অপারগতা প্রকাশ করার কারণে সরকার করোনাভাইরাস আক্রান্তদের খবর সামনে এনেছে বলেও মনে করছেন তিনি। করোনাভাইরাস আরও আগে দেশে ঢুকেছে বলেই ধারনা বিএনপি মহাসচিবের।

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে দুটি বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এসে বিএনপি মহাসচিব তার এমন ধারনা ব্যক্ত করেন। ‘প্রগতি ও সত্যের সন্ধ্যানে’ ও ‘মূল্যবোধ অবক্ষয়ের খণ্ডচিত্র’ নামে বই দুটি লিখেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

সরকার করোনা ভাইরাস নিয়ে এতদিন কিছু না বললেও হঠাৎ করে তিনজন আক্রান্তের খবর প্রকাশ করার বিষয়ে ফখরুল বলেন, ‘সরকার এতদিন এই বিষয়টি পুরোপুরি গোপনের চেষ্টা করেছে। যখন বিদেশি অতিথিরা আসতে অপারগতা প্রকাশ করলেন তখনই এ তিনজনের নাম আসলো।’

‘সরকার করোনাভাইরাস নিয়ে এতদিন কিছু বলেনি। তারা খুঁজে পায়নি। কী কারণে পায়নি তা জানি না। তবে হঠাৎ করে গতকাল (রবিবার) খুঁজে পেয়েছেন।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমার ধারণা তারা বিষয়টাকে পুরোপুরি গোপন করার চেষ্টা করেছেন। এ ব্যাধিটি দেশে অনেক আগেই এসেছে বলে অনেকের ধারণা। এ ধারণা সত্যিকার অর্থে এখন প্রকাশিত হচ্ছে।’

করোনাভাইরাস ঠেকাতে যেসব ব্যবস্থা নেয়া দরকার ছিল সরকার তা নেয়নি অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, ‘অবিলম্বে সব বন্দরে যথেষ্টসংখ্যক থার্মাল স্ক্যানারের ব্যবস্থা রাখা প্রয়োজন। মানুষের মধ্যেও সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন। চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত হাসপাতালও নির্ধারিত করে দেয়া দরকার।’

‘খালেদার মামলার মতো অনেক মামলায় আ.লীগ নেতারা জামিন পেয়েছেন’

দুর্নীতির যে দুটি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়া হয়েছে সে ধরনের মামলায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অনেক নেতা জামিন পেয়েছেন দাবি করে ফখরুল বলেন, ‘যে মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়া হয়েছে এ ধরনের মামলায় আওয়ামী লীগের অনেক নেতা জামিনে রয়েছেন, জামিন পেয়েছেন। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, একই মামলায় বিচার বিভাগ অন্যদের মুক্তি দেন তখন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেন না কেন?’

‘একজন মেজরের বাঁশিতেই জাতি স্বাধীনতার জন্য এগিয়ে আসে’

বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা সামরিক শাসক জিয়াউর রাহমানকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া সাম্প্রতিক এক বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কী ধরনের অশালীন কথাবার্তা। স্বয়ং একজন প্রধানমন্ত্রী বলেন, চারশ টাকার মেজর তার একদিনের একটা বাঁশির ফুয়ে স্বাধীনতা আসেনি।’

‘কিন্তু দুর্ভাগ্য হচ্ছে, একজন মেজরের বাঁশির সুরে সমগ্র জাতি স্বাধীনতার জন্য এগিয়ে আসে। আপনারা তখন কেউ পলায়ন করেছিলেন, কেউ আত্মসমর্পণ করেছেন।’

অন্যকে অপমান করার মধ্য দিয়ে মহত্ত্ব গড়ে উঠে না মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধে যাদের অবদান আছে তাদেরকে স্বীকার করে নেয়া উচিত ছিল। কিন্তু আমরা দেখেছি দুর্ভাগ্যক্রমে তারা (আওয়ামী লীগ) অন্য কাউকে স্বীকার করতে চায় না। স্বীকার করতে চান না তাজউদ্দিন আহমেদকে, জেনারেল ওসমানীকে, না শহীদ জিয়াউর রহমানকে। অন্যদের কথা বাদই দিলাম।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপচার্য অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ড. আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী, ড. মুসতাহিদুর রহমান, ডেইলি ফিন্যান্সিয়াল হেরাল্ডের সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, ড. আসিফ নজরুল, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ