করোনা নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছে বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী

করোনাভাইরাস নিয়ে বিএনপি রাজনীতি শুরু করেছে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেছেন, ‘তাদের (বিএনপি) উচিত ছিল করোনা ভাইরাস নিয়ে রাজনীতি না করে জনগণের পাশে দাঁড়ানো। এটি একটি বৈশ্বিক দুর্যোগ। এটি শুধুমাত্র বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নয় সমগ্র পৃথিবীব্যাপী দুর্যোগ।’

মঙ্গলবার (১০ মার্চ) দুপুরে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক রাজনৈতিক বিষয়ে ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সমগ্র পৃথিবীব্যাপী বিমান চলাচল সংকুচিত হয়ে গেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউস থেকে পারত পক্ষে বের হচ্ছেন না। এভাবে বিশ্ব নেতারা তাদের প্রোগ্রামগুলো কার্টেইল করছে। এই বৈশ্বিক দুর্যোগে যারা জনগণের জন্য রাজনীতি করে তাদের উচিত জনগণের পাশে দাঁড়ানো।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি এটি নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছে। সবকিছুর মধ্যে রাজনীতি খোঁজা এবং গতকাল মির্জা ফখরুল সাহেব যে বক্তব্য দিয়েছেন তা করোনাভাইরাস নিয়ে জনগণের সঙ্গে মশকরা করার শামিল। তারা সব সময় চিন্তিত-ব্যস্ত আছেন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে। জনগণের জন্য যদি তারা রাজনীতি করেন দয়া করে করোনাভাইরাস নিয়ে রাজনীতি করবেন না। দলমত নির্বিশেষে এই দুর্যোগ নিয়ে আমাদের কাজ করা প্রয়োজন।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালনের জন্য দেশবাসীর পক্ষ থেকে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী জনস্বার্থের কথা চিন্তা করে সেই প্রোগ্রামগুলো সংকুচিত করেছেন। কোন প্রোগ্রাম বাতিল করা হয়নি। বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে এবং বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর এই প্রোগ্রামগুলোকে পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। বিশ্ব নেতারা মুজিব বর্ষের প্রোগ্রামে অংশ নেওয়ার সম্মতি দিয়েছিলেন এবং নিশ্চিত করেছিলেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর নিশ্চিত করে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। যেদিন মুজি বর্ষ উদযাপনে জাতীয় কমিটি বেশি জনসমাগম হওয়া প্রোগ্রামগুলো আপাতত পরিহার করা হলো সেদিনও ভারতের সরকারের পক্ষ থেকে মোদির সফর নিয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছিল।’

তিনি বলেন, ‘কিছু পত্র-পত্রিকা করোনা নিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। বাংলাদেশে তেমন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। আতঙ্ক ছড়ানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। করোনা মোকাবিলায় সরকার বহু আগে থেকে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। বিদেশ থেকে যারা আসছিলেন এবং আসছেন সবাইকে স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে হয়েছে। অন্যান্য দেশও সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।’

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘একটি অসাধু ব্যবসায়ী মহল মাস্ক, হ্যান্ডওয়াশের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। নানা ধরনের ক্লিনিক্যাল ম্যাটারিয়ালসের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। সরকার এ ব্যাপারে দৃষ্টি রাখছে। যারা এই কাজগুলো করবে সরকার তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

বাংলাদেশে স্কুল কলেজ বন্ধের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

খালেদার মুক্তির বিষয়ে আবেদনের প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘তারা জনগণের কথা ভাবেন না বিধায় বিএনপির রাজনীতিটাও জনগণের স্বাস্থ্যের মধ্যে আটকে আছে। বেগম জিয়ার স্বজনরাও তাকে নিয়েই চিন্তা করছেন, অন্য কাউকে নিয়ে চিন্তা করছে না।’

‘জয় বাংলা’ স্লোগানকে জাতীয় স্লোগান হিসেবে হাইকোর্টের রায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘হাইকোর্ট আজ একটি রায় দিয়েছেন, জয় বাংলাকে জাতীয় স্লোগান হিসেবে গ্রহণের জন্য। সবাই যেন জয় বাংলা স্লোগান দেয়। এ রায়কে আমরা স্বাগত জানাই। এখন জয় বাংলা স্লোগান দিতে যাদের লজ্জা লাগে হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী বিএনপিসহ তাদের জয় বাংলা স্লোগান দেওয়া উচিত। দেশের স্বাধীনতার প্রতি সম্মান রেখে, সব ক্ষেত্রেই আমাদের স্লোগান ছিল জয় বাংলা। জয় বাংলা কোনো দলের স্লোগান নয়, জয় বাংলা মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান।’