‘খুবই বেদনাদায়ক’ সপ্তাহ আসছে : ট্রাম্প

trump

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনালড ট্রাম্প নাগরিকদের উদ্দেশ্যে বলছেনে, আসন্ন ‘খুবই বেদনাদায়ক’ সপ্তাহের জন্য প্রস্তুত হতে।

হোয়াইট হাউজে দেয়া বক্তব্যে করোনাভাইরাস মহামারিকে তিনি ‘একটি প্লেগ’ বলে বর্ণনা করেন।

দেশটিতে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। আসন্ন কয়েক সপ্তাহে দেশটিতে আড়াই লাখ মৃত্যু হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এমন সময় এসব কথা বলছিলেন ট্রাম্প যখন যুক্তরাষ্ট্রে সব রেকর্ড ছাড়িয়ে চব্বিশ ঘন্টায় কোভিড-১৯ এ মারা গেলো ৮৬৫ জন।

দেশটিতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা এখন ৩,৮৭০ জন, যা প্রাদুর্ভাবের প্রথম কেন্দ্র চীনে মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যার চেয়ে বেশি।

এরকম পরিস্থিতি ডোনাল্ড ট্রাম্প এখন আর কোনো ‘সুগার কোটেড’ বা তিক্ত কথায় মিষ্টির প্রলেপ দিতে চাইছেন না বলে মনে করছেন বিবিসির বিশ্লেষকরা।

ফলে তিনি ঈষ্টারের উৎসবের এই মৌসুমে কোন মিরকলের কথা বলছেন না, যার মাধ্যমে কোন এক ঐশী ক্ষমতাবলে ভালো হয়ে যাবে করোনাভাইরাস মহামারি, আর ব্যবসা বাণিজ্যও খুলে দেয়া যাবে, বলছেন বিবিসির অ্যান্থনি জারকার।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলছেন, “আসন্ন দুটি সপ্তাহ হতে যাচ্ছে খুব, খুবই বেদনাদায়ক”।

এদিকে বর্তমান পরিস্থিতিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সাথে তুলনা করছেন জাতিসংঘের মহাসচিব।

অ্যান্তনিও গুতেরেস বলছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবীর সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সাম্প্রতিক করোনাভাইরাস।

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে এই ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে যেই মন্দা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে যাচ্ছে সেরকমটা ‘সম্ভবত নিকট অতীতে দেখা যায়নি।’

সাম্প্রতিক প্রাদুর্ভাবের ফলে আর্থ সামাজিক অবস্থার ওপর সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে জাতিসংঘের প্রতিবেদন প্রকাশের সময় এই মন্তব্য করেন গুতেরেস।

সারাবিশ্বে এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৮ লাখ মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৪১ হাজারের বেশি মানুষের।

জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ১ লাখ ৮১ হাজারেরও বেশি মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ হয়েছে।

করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রে অবরোধ পরিস্থিতির ওপর আরো কড়াকড়ি আরোপ করা হচ্ছে, যার ফলে প্রতি চারজন নাগরিকের তিনজনই একরকম লকডাউন পরিস্থিতিতে থাকবেন।

ওদিকে করোনাভাইরাসের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ দেশগুলোর একটি স্পেনে গত ২৪ ঘন্টায় ৮৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা স্পেনে এখন পর্যন্ত একদিনে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর রেকর্ড।

যুক্তরাজ্যের কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী ৩০শে মার্চ পর্যন্ত সেখানে মৃত্যু হয়েছে ১,৭৮৯ জনের – যার মধ্যে শেষ ২৪ ঘন্টায় মৃত্যু হয়েছে ৩৮১ জনের।

জাতিসংঘের মহাসচিবের বক্তব্য:
নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে দেওয়া বক্তব্যে মি. গুতেরেস বলেন, “নতুন করোনাভাইরাস সমাজগুলোর মূলে আঘাত করছে, মানুষের জীবন ও জীবিকা কেড়ে নিচ্ছে।”

“জাতিসংঘ গঠনের থেকে আমাদের সামনে সবচেয়ে বড় পরীক্ষা হিসেবে এসেছে কোভিড-১৯।”

মহামারি নিয়ন্ত্রণ ও এর সমাপ্তি নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য খাতে ‘অতিস্বত্ত্বর সমন্বিত পদক্ষেপ’ আহ্বান করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।

জাতিসংঘের রিপোর্টে ধারণা প্রকাশ করা হয় যে প্রাদুর্ভাবের কারণে সারাবিশ্বে প্রায় আড়াই কোটি মানুষ চাকরি হারাতে পারে।