যশোরের দাইতলা গ্রামে বহিরাগতদের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ স্থানীয় যুবকদের

করোনা ভাইরাসের সংক্রমন রোধে যশোর সদর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের দাইতলা গ্রামে স্থানীয় যুবকদের উদ্যোগে গ্রামের প্রবেশ মুখে বাঁশের ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে। বহিরাগতদের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণে মঙ্গলবার তারা গ্রামের সবকটি প্রবেশ মুখে এই ব্যারিকেড স্থাপন করে। পাশাপাশি হাত ধোঁয়ারও ব্যবস্থা করেছে তারা।

উদ্যোক্তারা জানান, করোনার সংক্রমন দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। এই সংক্রমণ রোধে বাইরে থেকে যাতে কেউ এই গ্রামে প্রবেশ না করে সেলক্ষ্যে আমরা যুবসমাজের পক্ষ থেকে এমন উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। যাতায়াত নিয়ন্ত্রণে গ্রামের সবকটি প্রবেশমুখে ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি হাত ধোঁয়ারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া যাতে কেউ ঘর থেকে বের না হয় এবং সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার জন্য আমরা সকলকে সচেতন করার চেষ্টা করছি। এছাড়া করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা মূলক তথ্য মাইকে প্রচার করা হচ্ছে।

এসময় ত্রাণ বিতরণ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। অভিযোগ করেন, দাইতলা-ফতেপুর দুই গ্রাম মিলে একটি ওয়ার্ড। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির বাড়ি ফতেপুরে হওয়ায় তার নিজ গ্রামে বেশি ত্রাণ দিচ্ছে। চেয়ারম্যানের কাছে তারা শুনেছেন এপর্যন্ত ২৮টি কার্ড দিয়েছেন স্থানীয় মেম্বর তবিবর রহমানকে। কিন্তু দাইতলা গ্রামে দেওয়া হয়েছে মাত্র ৫টি কার্ড।

ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন, ফতেপুর গ্রামে বাইশ’শ ভোটার আর আমাদের গ্রামে আঠারো’শ ভোটার। দাইতলা ছোট গ্রাম মনে হওয়ায় হয়ত মেম্বার তার নিজ গ্রামে ২৩টি আর এখানে ৫টি কার্ড দিয়েছে। এছাড়া কি পরিমাণে খাদ্যসামগ্রী আসছে এবং কি পরিমানে বিতরণ হচ্ছে এনিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তারা।

এদিকে দাইতলা গ্রামের যুবসমাজের উদ্যোগে ৮০টি পরিবারকে মানবিক সহায়তা দেয়ার জন্য জোরেসোরে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তারা মনে করছেন আগামীকাল বুধবার তারা কর্মহীন ও অসহায় দরিদ্রদের হাতে এসকল খাদ্যসামগ্রী তুলে দিতে পারবেন।

অভিযোগের বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি তবিবর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযোগটি সঠিক নয়। আমি নিজেই সেখানে ১০টি কার্ড দিয়েছি। এছাড়া চেয়ারম্যানও সাহায্য সহযোগিতা দিয়েছেন।

ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলামের কাছে যুবকদের উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের এই উদ্যোগটি সময়োপযোগি। তারা নিজেরা সচেতনতামুলক কাজ করছে এতে আমি খুশি। দাইতলা গ্রাম ছাড়াও বাউলিয়া গ্রামেও এমন উদ্যোগ নিয়েছে। প্রয়োজন হলে সব গ্রামেই এমনটি করা হবে।

এদিকে ত্রাণ বিতরণের সম্বন্ধে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মেম্বারদের মাধ্যমে বিতরণ করছি। ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বর তবিবর রহমানকে সরকারি কার্ড ১৮টি এবং আমার ব্যক্তিগত ১০টি মোট ২৮টি কার্ড আমি দিয়েছি। সে এগুলি কিভাবে বিতরণ করেছে সেটা আমি জানিনা। তবে দাইতলাসহ আশাপাশের বিভিন্ন গ্রামের লোক আমার বাড়িতে সাহায্যের জন্য আসছে। তাদেরকে আমার মা রাবেয়া বেগম নিজ উদ্যোগে সাহায্য সহযোগিতা করছেন। তিনি কাউকে ফেরাচ্ছেন না। তার সাধ্য অনুযায়ী সকলকে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন।