বাঘারপাড়ায় করোনা ভীতি উপেক্ষা করে হাট-বাজারে জনস্রোত

যশোরের বাঘারপাড়ায় করোনা সংক্রমণরোধে প্রশাসনের নির্দেশনা মানছেন না অধিকাংশ মানুষ। করোনা ভীতিকে উপেক্ষা করে প্রতিদিনই হাট বাজারে জনস্রোত বেড়েই চলেছে।

সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে প্রশাসন অধিকাংশ কাঁচা ও মাছ বাজার স্থানান্তর করে খোলা মাঠে সরিয়ে নিলেও তা কাজে আসছে না। প্রশাসনের এ উদ্যোগকে কেউই আমলে নিচ্ছে না।

সোমবার সকালে উপজেলা সদরের মহিলা কলেজ মাঠের অস্থায়ী মাছ ও কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, লোকজনের উপচে পড়া ভীড়। কেউই সামাজিক দূরত্ব মেনে চলছেন না। যে যার মত বাজারে ঘোরাফেরা করছেন। কেউ আসছেন বাজার করতে আবার কেউ আসছেন মানুষের ভীড় দেখতে। আবার সেই সাথে চায়ের দোকানগুলোতে চলছে সরব আড্ডা। ঠিক এমনই অবস্থা উপজেলার অধিকাংশ বাজারের।

এদিকে রাস্তায় প্রতিদিনই চলাচল করছে ইজিবাইক, অটোভ্যান, সিএনজি, মটরসাইকেলসহ নানা ধরণের যানবহন। এরই মধ্যে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজি দরের চাউল বিক্রিতেও বড় সমস্যা দেখা দিচ্ছে। শতশত মানুষ এ চাউল ক্রয় করতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। সামাজিক দূরত্ব না মেনে এখানেও চলছে চাউল কেনাকাটা। যদিও ডিলারশিপরা হ্যান্ড মাইকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলছেন। কিন্তু মাইকে বলার সাথে কিছু সময় ঠিক থাকলেও আস্তে আস্তে আবার আগের অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে। উপজেলা সদরের বাইরের গ্রাম অঞ্চলের হাটগুলোর অবস্থা আরো নাজুক। সেখানেও সামাজিক দূরত্ব তো দূরের কথা মানুষের মধ্যে নেই কোন সতর্কতা।

অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দোকান ছাড়াও বিভিন্ন দোকানেও চলছে কেনাবেচা। পুলিশ ও সেনাবাহিনী গাড়ির শব্দ পেলেই পড়ে যাচ্ছে দোকানের সার্টার। লোকজন তাদের আড়াল হচ্ছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনী চলে গেলেই পুনরায় দোকান খুলছে বাজারের ব্যসায়ীরা। এর মধ্যেও চলছে উপজেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জেল জরিমানা। তবুও থেমে নেই মানুষের অবাধ চলাচল।

সচেতন মহলের দাবী, মানুষ সচেতন না হলে পুলিশ কিংবা সেনাবাহিনী দিয়ে তাদের ঘরে তোলা যাবে না।

বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের জাতীয় ক্রীড়া ধারাভাষ্যকর স্থানীয় ছাতিয়ানতলা গ্রামের কুমার কল্যান জানান, বর্তমান হাট-বাজারের যেভাবে জনসমাগম বাড়তে তাতে প্রশাসনের আরো কঠোর অবস্থানে যাওয়া দরকার।

এ ব্যাপারে বাঘারপাড়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আল মামুন বলেন, পুলিশ প্রথম থেকেই কঠোর অবস্থানে রয়েছে। করোনা মোকাবেলায় পুলিশের পক্ষ খেকে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে আপ্রাণ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। প্রতিদিনই উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে অভিযান চালানো হচ্ছে। বোরো মৌসুমের ধান কাটার জন্য কিছু লোক বাঘারপাড়ায় আসছে ও কিছু লোক বাইরে যাচ্ছে। যার কারণে একটু ঝামেলা হচ্ছে। এ সমস্যার দ্রুতই সমাধান করা হবে।

জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানিয়া আফরোজ বলেন, জনসাধারণকে সচেতন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলা জুড়ে মাইকিং করা হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে বড় বড় কয়েকটি বাজার স্থানান্তর করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খোলা মাঠে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। প্রতিদিনই পুলিশ ও সেনা সদস্য নিয়ে যৌথ অভিযান চালানো হচ্ছে। নির্দেশনা অমান্যকারীদের মোবাইল কোর্টের মাধ্যেমে সাজাও দেওয়া হচ্ছে। তারপরও মানুষ যদি নির্দেশনা না মানে তাহলে দুঃখ করা ছাড়া আর কিছু করার থাকে না।