৬ কোটি টাকা ‘অনুদান’ মিলেছে, বেতন পাচ্ছেন এফডিসির কর্মীরা

অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ‘অনুদান’ হিসেবে পাওয়া ৬ কোটি টাকা থেকে ২৬১ কর্মকর্তা-কর্মচারীর মার্চ ও এপ্রিল মাসের বেতন পরিশোধ করছে লোকসানের মুখে ধুঁকতে থাকা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি)।

করোনাভাইরাস সঙ্কটের মধ্যে কর্মীদের বেতন দিতে রোববার অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ৬ কোটি টাকা ‘অনুদান’ পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) নুজহাত ইয়াসমিন।

তিনি বলেন, “ইতোমধ্যে তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুদানের জিও হয়েছে। তিন-চার দিনের মধ্যেই কর্মীদের দুই মাসের বেতন পরিশোধ করতে পারব।”

কর্মীদের বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য ব্যয়ভার মেটাতে ২১ কোটি টাকা অনুদান চেয়ে গত ২৩ মার্চ এফডিসি থেকে আবেদন করা হয়েছিল; সেখান থেকেই ৬ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বলে জানান অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমান।

এফডিসির নিজস্ব তহবিলে অর্থ না থাকায় কর্মীদের দুই মাসের বেতন পরিশোধের জন্য এই অনুদানের উপরই নির্ভর করতে হচ্ছিল বলে জানান নুজহাত ইয়াসমিন।

এর আগে ‘দুই মাস ধরে বেতন পাননি এফডিসির কর্মীরা’ শিরোনামে এক সংবাদে মালী, ক্লিনার, নিরাপত্তারক্ষীসহ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর প্রায় ২২০ কর্মচারী মানবেতর জীবনযাপনের কথা উঠে আসে।

টানা দুই মাস বেতন না পাওয়ায় বাড়িভাড়া, সন্তানদের পড়াশোনার খরচ মেটাতে না পেরে নানা জনের কাছে ‘অপদস্ত’ হওয়ার কথা তুলে ধরেন কর্মচারীরা।

বেতন পাওয়ার খবরে এক কর্মচারী বলেন, “বেতন পাচ্ছি জেনে ভালো লাগছে। আমরা এই বেতনের উপরই নির্ভর করে বাঁচি। দেওয়ালে একদম পিঠ ঠেকে গিয়েছিল। চারদিকে ঋণের জালে আটকে গিয়েছিলাম। বুঝতে পারছিলাম না কী করব।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এফডিসির এক কর্মকর্তা বলেন, “কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলিয়ে ২৬১ জনকে মাসে বেতন দিতে এক কোটি টাকা খরচ হয়। ৬ কোটি টাকার মধ্যে দুই মাসের বেতন বাবদ দুই কোটি ও ঈদ বোনাসে ৬০ লাখ টাকা খরচ হবে। এরপরও কিছু টাকা থাকবে তা দিয়ে আরো কয়েক মাসের বেতন দেওয়া যাবে।”

এক সময়ের লাভজনক স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানটি নানা সঙ্কটে এখন জর্জর; লোকসানের মুখে ধুঁকতে থাকা প্রতিষ্ঠানটিতে ব্যয়ভার মেটাতে অনুদানের উপর নির্ভর করতে হয়।

প্রতি বছরই ঘাটতি মেটাতে ‘ইকুইটি’ হিসেবে এ অনুদান দেওয়া বলে বলে জানান অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।

“ইকুইটি মানে অনুদান হিসেবেই এ অর্থ দেওয়া হয়। আমরা যেহেতু অটোনমাস বডিকে অনুদান দিতে পারি না। সেকারণে ইকুইটি হিসেবে দেওয়া হয়। যার ফলে এফডিসিতে সরকারের শেয়ার বাড়ল।”