ইমপেরিয়ালের করোনা টীকার পরীক্ষা শুরু

ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডনের গবেষকদের উদ্ভাবিত কোভিড-১৯ এর ভ্যাক্সিন বা টীকার একটি স্বল্পমাত্রার ডোজ প্রয়োগ করা হয়েছে প্রথম সুস্থ ও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী একজন স্বেচ্ছাসেবকের ওপর। ১৯ শে জুন তার শরীরে এই টীকা পরীক্ষামুলকভাবে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে প্রয়োগ করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত তার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার তো কোনো তথ্য পাওয়া যায় নি। তিনি সুস্থ আছেন। চার সপ্তাহের মধ্যে তার ওপর দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগ করার কথা রয়েছে। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন ডেইলি মেইল।

খবরে বলা হয়, এর মধ্য দিয়ে করোনা মহামারি বন্ধে কার্যকর টীকা আবিষ্কারে বৃটেনের আরেক অভিজাত প্রতিষ্ঠান অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত হলো ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডন।
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে চ্যাডক্স১এনকোভ-১৯ (বা সংক্ষেপে এজেডডি১২২২) উদ্ভাবন করেছে।

তাদের এই টীকার পরীক্ষা শুরু হয়েছে এপ্রিলেই। সে সময় কমপক্ষে এক হাজার অংশগ্রহণকারী স্বেচ্ছাসেবকের শরীরে প্রয়োগ করা হয়েছে এই টীকা।

ওদিকে ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডনের সংক্রামক রোগ বিভাগের প্রফেসর রবিন শ্যাটক তাদের গবেষণার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি বলেছে, তাদের টীকা নিয়ে তার টিম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপে কাজ করছেন। ‘আমরা এখন অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি, যাতে আমরা এই টীকার নিরাপত্তা এবং এর এন্টিবডিগুলো নিরপেক্ষ করার সক্ষমতা যাচাই করতে পারি। যা থেকে আমরা কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে কার্যকর সাড়ার বিষয়ে একটি ইঙ্গিত দিতে পারি। আগামী কয়েক মাসে আমরা আমাদের অগ্রগতি সম্পর্কে আভাস পেতে পারি। এই ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার প্রাথমিক দফায় সামনের দিনগুলোতে প্রথম ডোজ নিতে আগ্রহী ১৫ জন স্বাস্থ্যবান স্বেচ্ছাসেবক। কি মাত্রায় ওষুধ প্রয়োগ করলে তা নিরাপদ থাকবে তা নির্ধারণের জন্য গবেষকরা প্রথমেই স্বল্পমাত্রা প্রয়োগ করছেন। এরপর আস্তে আস্তে মাত্রা বৃদ্ধি করবেন। এ প্রক্রিয়ায় মোট ৩০০ স্বাস্থ্যবান অংশগ্রহণকারী অংশ নেবেন বলে মনে করা হচ্ছে’।

সার্স-কোভ-২ এর জেনেটিক ম্যাটেরিয়ালের ওপর ভিত্তি করে মানসম্মত সিনথেটিক জেনেটিক কোড ব্যবহার করা হয়েছে ইমপেরিয়ালের আরএনএ টীকায়। এই টীকা মাংসপেশীতে প্রয়োগ করার ফলে সে সার্স-কোভ-২ এর উপরিভাগে অকেজো করে দেয়ার মতো প্রোটিন তৈরিতে জেনেটিক নির্দেশনা দেয়। এই প্রোটিনের উপস্থিতি কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে সুরক্ষা নিশ্চিত করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে।

যদি পরীক্ষায় এটি নিরাপদ দেখা যায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় প্রতিশ্রুত সাড়া দেয় তাহলে অক্টোবরে তা প্রয়োগ করা হবে ৬০০০ অংশগ্রহণকারীর শরীরে। ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডনের সংক্রামক ব্যাধি ও এই গবেষণার প্রধান অনুসন্ধানকারী ডা. ক্যাট্রিনা পোলক বলেছেন, প্রথম ডোজেই আমরা বিস্ময়কর ফল পেয়েছি। এখন আমরা এই টীকার মাত্রা নির্ধারণ করবো। আরো মানুষের ওপর এটা প্রয়োগ করে মূল্যায়ন করবো। এই টীকা উদ্ধাবন এবং তা বৃটেন ও বিশ্বজুড়ে বিতরণের জন্য এরই মধ্যে ভ্যাকইকুইটি গ্লোবাল হেলথ নামে একটি নতুন সামাজিক উদ্যোগ গঠন করেছে ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডন।